Labor

Education: ক্লাস ছেড়ে দিনজুরিতে

দারিদ্রের সঙ্গে লড়তে ওদের শিক্ষালয়ের রাস্তা ভুলে ইট কাঠ, সিমেন্ট বালি বহনের কাজে তামাম দিন কেটে যাচ্ছে।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২২ ০৭:০৪
Share:

শুভজিৎ সরকার

বাড়ি থেকে রোজ প্রায় ১৪ কিমি রাস্তা সাইকেল চালিয়ে সকালে শহরে পৌঁছে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লেগে পড়ছে বালুরঘাট কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র শুভজিৎ সরকার। বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিশপুর সীমান্তের ন’পাড়া গ্রামের বাসিন্দা শুভজিৎ শুধু নয়, আমড়াইলের প্রত্যন্ত বামনহাট এলাকার একাদশ শ্রেণির শুভেন্দু বর্মণ, দিলীপ রায়দের মতো একাধিক কলেজ পড়ুয়া শ্রমিকের দলে নাম লিখিয়েছে।

Advertisement

দারিদ্রের সঙ্গে লড়তে ওদের শিক্ষালয়ের রাস্তা ভুলে ইট কাঠ, সিমেন্ট বালি বহনের কাজে তামাম দিন কেটে যাচ্ছে। সামনেই কলেজে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সিমেস্টারের দিন ঘোষণা হবে। কলেজে অফলাইনে ক্লাসও চলছে। কলেজের শ্রেণি কক্ষের বদলে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে দিনের শেষে ২৪০ টাকা মজুরি নিয়ে বাড়ি ফেরার প্রয়োজন বেশি ওদের কাছে। সরাসরি তা মুখে প্রকাশ না করলেও শুভজিতের কথায়, “কলেজে যাব। তার জন্য খরচপত্রের টাকা দরকার।” সংসারে অভাবের বিরুদ্ধেও লড়তে কাজ ছাড়া উপায় নেই। তাই গাড়ি ভাড়া বাঁচাতে দেড় ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে কাজের জায়গায় পৌঁছচ্ছে ওরা।

গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা তথা টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি কৌশিক সরকার বলেন, “আর্থিক ভাবে দুর্বল একাংশ কলেজ পড়ুয়া ওই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তারা যে কলেজের ছাত্র হোন না কেন, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সবরকম সাহায্য করা হবে।”

Advertisement

শুভজিতের বাবা ভিন্ রাজ্যের শ্রমিক। বাড়িতে গৃহবধূ মা এবং এক শ্রমিক দাদাকে নিয়ে ওদের কষ্টের সংসার। গত বছর উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর থেকে দিনমজুরের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে বামনহাটের শুভেন্দুও। শুভজিতের সঙ্গে বালুরঘাট কলেজে একসঙ্গে পড়ে শুভেন্দু। দিনমজুরি করে কিছু বইপত্র কিনেছে একাদশ শ্রেণির দিলীপও। তবে ওদের মত কলেজ পড়ুয়া অনেকে এই ভাবে শ্রমিক হয়ে শিক্ষার অঙ্গন থেকে ক্রমশ সরে যাচ্ছে। এদের কথায়, লকডাউনের পর থেকে এলাকার বহু পড়ুয়া দিনমজুরি করছে। অনেকে বেশি রোজগারের হাতছানিতে ভিন্ রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের দলে নাম লেখানোর কথাও ভাবছে।

বালুরঘাটের টিএমসিপির সভাপতি অমরনাথ ঘোষ বলেন, “দুঃস্থ পড়ুয়াদের জন্য সরকারের একাধিক সহায়তা প্রকল্প রয়েছে। ওরা যোগাযোগ করলে সহায়তা করব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement