— প্রতীকী চিত্র।
বড়দিনেও কেকের বাজার সে ভাবে জমে উঠল না, দাবি বিক্রেতাদের। শীত না পড়া থেকে মূল্যবৃদ্ধি, নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে বলে দাবি তাঁদের। সেই সঙ্গে, কাঁচামালের দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় ছোট-মাঝারি বেকারিগুলি পর্যাপ্ত কেক সরবরাহ করতে সমস্যায় পড়েছে বলেও দাবি ব্যবসায়ী মহলের।
কেক বিক্রেতারা জানান, কেকের বাজার শুরু হয় মূলত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে। ২৫ ডিসেম্বর বিক্রি অনেকটা বেড়ে যায়। জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এই বাজার থাকে। বাঁকুড়ার বেকারি ব্যবসায়ী নবেন্দু সিংহের দাবি, এ বার গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিক্রি কমেছে। কারণ, কেক তৈরির কাঁচামাল ময়দা থেকে মার্জারিন, নানা সামগ্রীর অনেকটা মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। তার উপরে রয়েছে জিএসটি। কিন্তু প্রতিযোগিতার বাজারে দাম সে ভাবে বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে, লাভ কমছে। এ ছাড়া, এ বছর এখনও জমিয়ে শীত না পড়ায় বিক্রিতে ভাটা বলে ধারণা তাঁদের।
কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিতে ছোট-মাঝারি বেকারিগুলি বেকায়দায় পড়েছে বলেও ব্যবসায়ীদের দাবি। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বেকারি অ্যাসোসিয়েশন’-এর মুখ্য কার্যনির্বাহী কর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, রাজ্য জুড়ে তিন হাজারের বেশি ছোট-মাঝারি বেকারি রয়েছে। তাদের মধ্যে দেড় হাজারের বেশি বেকারি কেক তৈরি করে। বড় ও বহুজাতিক ব্যবসায়ীরা বাজারের দখল নিচ্ছে। তাদের চটকদার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছোট বেকারিদের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। সে কারণে, দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। তাতে গুণমান ঠিক রাখতে গিয়ে মুনাফা কমে গিয়েছে। ফলে অনেক বেকারি পর্যাপ্ত কেক তৈরিই করতে পারছেন না। আরিফুল বলেন, ‘‘তিন বছরের গম এফসিআই গুদামে মজুত থাকে। এর পরেও কী করে ময়দার দাম বাড়ে, তা বোঝার উপায় নেই।’’ তাঁর আরও দাবি, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অশান্তির পরিস্থিতির কারণেও নানা কাঁচামালের দাম ৩০-৩৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের বেকারি ব্যবসায়ী কেশব শেঠিয়া দাবি করেন, তুলনামূলক ভাবে কেকের চাহিদা কমেনি। কিন্তু বড় কারবারিরা ছাড়াও, বাড়িতে কেক তৈরি করে বিক্রির প্রবণতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। বাড়িতে যাঁরা কেক তৈরি করছেন, তাঁরা চাহিদা অনুযায়ী কম দামে বিক্রি করছেন। কারণ, তাঁদের সে ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক খরচ নেই। তবে তাতে গুণমান কতটা বজায় থাকছে, সেটা চিন্তার বিষয় বলে দাবি তাঁর। কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিভিন্ন কাঁচামাল কম দামেও পাওয়া যায়। কম দামে বিক্রির জন্য ডালডা ব্যবহার করা হয়। তাতে নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে।