এ বারেও বাবা-মায়ের নাম ভাঁড়িয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে হল সাবেক ছিটমহলের ছাত্রছাত্রীদের। ছিটমহল বিনিময়ের দেড় বছর পরেও নিজের বাবা-মায়ের নাম স্কুলের নথিপত্রে তুলতে পারেনি তারা কেউ।
মধ্য মশালডাঙার বাসিন্দা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আনিসুর রহমান, চাঁদ মিয়াঁ থেকে পোয়াতুর কুঠির সাবানা পারভিন সকলেই তাই এ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে প্রশাসনের কাছে। তাদের অভিভাবকেরা বলেন, “এ বারে অন্তত ছেলেমেয়েরা প্রকৃত পরিচয় ফিরে পাবে সে আশা করেছিলাম। আদতে তা হল না। প্রশাসনের কাছে বহুদিন থেকেও আর্জি জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, ওই সমস্যা মেটাতে তারা বিষয়টি ঊর্ধবতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছেন।
কেন নাম ভাঁড়াতে হয় তাদের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে থাকা সাবেক ছিটমহলগুলি এক সময় বাংলাদেশের অন্তর্গত ছিল। সেখানকার বাসিন্দারা আইনত কোনও সুযোগ সুবিধে পেতেন না। তাঁদের অন্য দেশের লোক হিসেবেই দেখা হত। এই অবস্থায় ওই এলাকার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শিখতে সঠিক ঠিকানা গোপন রাখতেন।
আশপাশের ভারতীয় গ্রামের পরিচিত, আত্মীয়দের কাউকে বাবা-মা হিসেবে পরিচয় দিয়ে স্কুলে ভর্তি হতেন তাঁরা। এ বারে নাজিরহাটের একটি হাইস্কুলের দুই ছাত্র বাসন্তীরহাটের একটি স্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে। ওই পরীক্ষার্থীদের এক আত্মীয় কলেজ পড়ুয়া সাদ্দাম হোসেন বলেন, “ছিটমহল বিনিময় হওয়ার পরেই আমরা ভেবেছিলাম ওই সমস্যা মিটে যাবে। অথচ এখনও আমাদের ওই সমস্যার মধ্যে দিয়েই যেতে হচ্ছে।”
ছিটমহল আন্দোলনের নেতা তথা বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “সাবেক ছিটের বাসিন্দা সব পরীক্ষার্থীদেরই এই অবস্থা হয়েছে। প্রশাসনকে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি।”