মুখে নেই মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব বিধি ভুলে উল্লাসে মাতলেন উচ্চ মাধ্যমিকে সফল ছাত্রীরা। শুক্রবার জলপাইগুড়ির সেন্ট্রাল উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় চত্বরে। ছবি: সন্দীপ পাল
মার্কশিট নিতে চড়া রোদে ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইনে দাঁড়িয়ে অভিভাবকেরা। পাশে ২৫-৩০ জন পড়ুয়া মত্ত বন্ধুদের সঙ্গে জড়াজড়ি করে ছবি তুলতে। কেউই ভাবছেন না স্বাস্থ্যবিধির কথা। সে প্রসঙ্গ প্রশ্ন করায় এক পড়ুয়ার মন্তব্য, ‘‘স্কুলের শেষ দিন। এক সঙ্গে বন্ধুদের আবার কবে দেখা হবে, জানি না। তাই আনন্দ করছি।’’ কিন্তু এই আনন্দই যে নিরানন্দের কারণ হতে পারে, অভিভাবকদের একাংশ তা বলাবলি করলেও বাধা দেওয়ার কেউ নেই। শুক্রবার শিলিগুড়ি শহরের বরদাকান্ত বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলের এমনই ছবি। স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘বিধি মেনেই মার্কশিট দেওয়া হয়েছে। তবে মাঠে সারাক্ষণ নজর দেওয়া যায়নি।’’
শিলিগুড়ি গার্লস, শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুল, শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির, মার্গারেট স্কুল, বাণীমন্দির রেলওয়ে হাইস্কুলের মতো বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই স্বাস্থ্যবিধি না মানার একই ছবি দেখা গিয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। ডেল্টা সংক্রমণ সিকিমে চোখ রাঙাচ্ছে। তারই মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট নিতে গিয়ে করোনা বিধি না মানায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন অনেকেই। শিলিগুড়ি মাধ্যমিক স্কুলগুলির ডিআই রাজীব প্রামাণিক বলেন, ‘‘করোনা বিধি মেনে শুধু অভিভাবকদের মার্কশিট নিতে বলা হয়েছে। তার পরও কেন নিয়ম মানা হচ্ছে না, সে ব্যাপারে খোঁজ নেব।’’
শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলে অভিভাবকদের অনেককে মাস্ক না পরে এবং পারস্পরিক দূরত্ব না মেনে স্কুলের বারান্দায় বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। স্কুলের গেটের সামনে মাস্কহীন ছাত্রীদের ভিড় করে গল্প করতেও দেখা গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অত্যুহা বাগচী বলেন, ‘‘প্রত্যেক অভিভাবককে সঙ্গে পড়ুয়াদের না আনতে বলা হয়েছে। তার পরও অনেকে নিয়ে এসেছেন। তবে, পড়ুয়াদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’’ শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলেও প্রায় একই ছবি। সেখানেও দূরত্ববিধি না মেনে পড়ুয়াদের ভিড় হয়েছে। লাইনে গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে মার্কশিট নিয়েছেন অনেকে। সেখানকার এক শিক্ষক বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও চিন্তিত।’’
শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে দুপুর ১টা থেকে মার্কশিট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেখা যায়, বেলা ১১টা নাগাদই পড়ুয়াদের অনেকে স্কুলে মার্কশিট নিতে হাজির। ভিড় হয়েছে সেখানেও। অন্য দিকে, দুপুর ১২টা থেকে মার্কশিট দেওয়ার কথা থাকলেও অনেক স্কুলে প্রায় দু’ঘণ্টা দেরিতে তা দেওয়া শুরু হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।