প্রতীকী ছবি।
পড়ুয়াদের হাতে প্ল্যাকার্ড, চোখে আকুতি। প্ল্যাকার্ডে লেখা করোনা আবহে ভর্তির ফি দেওয়ার সামর্থ নেই তাঁদের। মুকুব করা হোক ফি। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ত্রিশ জন ছাত্রী এই দাবিতে আন্দোলনে নামলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন অভিভাবকও। আন্দোলনকারীদের হঠাতে পুলিশ ডাকার অভিযোগ ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।
শুক্রবার, দুপুরে আলিপুরদুয়ারের বারোবিশা বালিকা বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ওই স্কুলে একাদশে ভর্তির জন্য ৮২০ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। অথচ পাশের এক হাইস্কুলে ভর্তির ফি তিনশো টাকা কম। করোনা আবহে রোজগারে মন্দা চলছে অনেকের। তাই এই সময় ফি মুকুব করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। অভিভাবকরা জানান, তাঁদের বেশ কয়েকজন রেশনের চাল পেয়ে দু’বেলা খেয়েপড়ে বেঁচে আছেন। এই সময় সন্তানদের ভর্তির চাপ, তাঁদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিভাবক অপর্ণা সরকার বলেন, ‘‘এই সময় ভর্তি ফি কোথায় কম নেওয়া হবে, উল্টে ফি অন্য স্কুল থেকে অনেক বেশি তা ধার্য করা হয়েছে। পুরো ফি মকুব করা হোক।’’
আর-এক অভিভাবক পেশায়
দিনমজুর পণ্ডিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ছেলেমেয়ে দু’জনই এ বার মাধ্যমিক পাশ করেছে। এ দিকে ঠিক মতো কাজও জুটছে না। এখন ভর্তির টাকা কী ভাবে জোগাড় করব? ভর্তির টাকা মকুব না করলে ছেলেমেয়ে দু’জনের পড়া বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই।’’ পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের অভিযোগ, যে স্কুলে পয়সা লাগবে না, বিক্ষোভরত ছাত্রীদের এ দিন সেখানে ভর্তি হতে বলেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নবনীতা শিকদার বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই ভর্তি-ফি ধার্য করা হয়েছে। পরিচালন সমিতিতে বৈঠক করে এই নিয়ে আলোচনা করা হবে। পুরোপুরি ফি মকুব সম্ভব নয়। তবে কারও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকলে, আবেদন করলে সেটা ভেবে দেখা হবে। পুলিশি দিয়ে আন্দোলনকারীদের বের করে দেওয়া বা তাঁদের হুমকি দেওয়ার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’