পাশে: ক্যানসার রোগীদের জন্য চুল দান করলেন জয়শ্রী। নিজস্ব চিত্র
ক্যানসার আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে চুল কাটলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী জয়শ্রী দেবনাথ। মারণ-রোগে আক্রান্তদের জন্য তা দান করলেন মুম্বইয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। তাঁর বক্তব্য, সকলের কাছে বার্তা দিতেই এমন পদক্ষেপ।
কালিয়াগঞ্জ শহরের হাসপাতালপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়শ্রী সংস্কৃত নিয়ে অনার্স পড়েন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার এই কাজে মাত্র এক জন ক্যানসার রোগীর উপকার হবে। ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের চুল দানে সকলকে সচেতন করতেই এমন কাজ করলাম।’’
এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর জন্য দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ের চুল দান করেছিলেন রায়গঞ্জের উকিলপাড়ার বাসিন্দা কম্পিউটার ব্যবসায়ী কৌশিক চক্রবর্তী। জয়শ্রীর বাবা গৌতম, মা জয়ন্তীর কথায়, ‘‘মেয়ের এমন ইচ্ছায় আমাদের কোনও আপত্তি ছিল না।’’
জয়শ্রী জানান, কেমোথেরাপিতে চুল উঠে যায় ক্যানসার আক্রান্তদের। তাতে অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বাড়ি থেকে বের হতে চান না। কয়েক দিন আগে ইন্টারনেটে মুম্বইয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার খোঁজ পান তিনি। ওই সংস্থা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চুল সংগ্রহ করে তা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের নকল চুল তৈরির কাজ করে। জয়শ্রী বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে ফোন ও ই-মেলে ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করি। আমাকে ন্যুনতম ১২ ইঞ্চি লম্বা চুল দেওয়ার কথা বলা হয়। সে ভাবেই চুল কেটে প্যাকেটে ঢুকিয়ে মুম্বইয়ে পাঠিয়েছি।’’
জয়শ্রী রায়গঞ্জের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যও। ওই সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর মোনালিকা দাসের বক্তব্য, ‘‘জয়শ্রীর উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেকে এ ভাবে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের জন্য চুল দানে এগিয়ে এলে ওঁর প্রচেষ্টা সার্থক হবে।’’
জয়শ্রীর মতোই ওই কাজে এগিয়েছেন শহরের লাইনবাজার এলাকায় কম্পিউটারের দোকান থাকা কৌশিক চক্রবর্তী। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর মেয়ে রিশিকার ১৬ ইঞ্চি লম্বা চুলের গোছা কেটে মুম্বইয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে পাঠিয়েছেন। রিশিকা রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সে বলে, ‘‘ক’দিন পরেই ফের মাথায় চুল গজাবে। এতে কারও ভাল হলে মনখারাপ করব কেন!’’