প্রতীকী ছবি।
কৃষক সংগঠনগুলির দাবিতে মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির নেতা-কর্মীরা। উত্তরবঙ্গে এখন ধান কেনাবেচার মরসুম। শিলিগুড়ি এবং উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ জেলায় অভাবী বিক্রির অভিযোগ উঠছে। অভিযোগ, ফড়েদের কাছেই কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষকদের স্বার্থের কথা বলে মিছিল, সভা, অবরোধ হচ্ছে। কিন্তু ধানের সঠিক মূল্য থেকে কৃষকরাই বঞ্চিত বলে অভিযোগ। তাহলে আন্দোলন, পথ অবরোধ কাদের জন্য? উঠছে প্রশ্ন।
দার্জিলিং জেলার খাদ্য দফতরের এ বছর ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ৮০ হাজার মেট্রিক টন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার মেট্রিক টনের বেশি ধান কেনা হয়েছে বলে দাবি। তারা ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ৪টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং ১০টি ফার্মার প্রডিউসার কোম্পানিকে দিয়ে ধান কেনা শুরু করবে বলে জানা গিয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়মক শাশ্বতসুন্দর দাস বলেন, ‘‘ধান কেনার ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে। সঠিক চাষিরা যাতে বঞ্চিত না হন সেজন্য আমরা প্রচার করছি।’’
অভিযোগ, ধান কেনার এই ঢিলেমির কারণে এবং টাকা তোলার ভেজালে অনেক চাষি ফড়েদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন। শিলিগুড়ি মহকুমায় বর্তমানে চার ব্লকে তিনটি সিপিসিতে ধান নিয়ে যেতে ব্লকের দূরের চাষিদের সমস্যায় পড়ছেন বলে অভিযোগ। চাষিদের দাবি, চেকের ঝামেলায় না গিয়ে হাতে হাতে টাকা পেতে ফড়েদের কাছেই কম দামে বিক্রি করছেন অনেকে।
ফাঁসিদেওয়ার চাষি নরেশ সিংহের অভিযোগ, সহায়ক মূল্য পেতে ব্যাঙ্কের জটিলতায় পড়তে হয়। কৃষক বাজারে ধান নিয়ে যাওয়ার আগেই পথে ফড়েদের দাপট দেখা যায়। তখন কেউ আন্দোলন করেন না। দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকারের দাবি, রাজ্য সরকারের সহায়ক মূল্য পাচ্ছেন চাষিরা। কিন্তু কৃষি আইন চালু হলে তাঁরা বঞ্চিত হবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাষিদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে পথে নেমেছি। ফড়েরাজ থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’
বাামেদের দাবি, কৃষকদের দাবিগুলি বাস্তবায়িত করতেই আন্দোলন। রাজ্যের কৃষকদের যেমন রাজ্য সরকার বঞ্চিত করছে তেমনই দেশের চাষিদের বঞ্চিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’
শিলিগুড়ি সাংগঠনিকে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক আনন্দময় বর্মণের অভিযোগ, ফড়েরাজ বাঁচিয়ে রেখেছে রাজ্য সরকার। তাহলে নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন কেন? তাঁর দাবি, কৃষক আইন নিয়ে চাষিদের ভুল বোঝাচ্ছে বাম এবং তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দল রাজ্যের কৃষকদের ধানের সহায়ক মূল্য দিতে ব্যর্থ। সেদিকে তাদের নজর নেই। ধানের সহায়ক মূল্য ১৮৬৮ টাকা কুইন্টাল। খোলা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৪৫০ টাকা কুইন্টালে। কৃষকরা ফড়েদের কাছে বেচলে কুইন্টাল প্রতি ৪০০ টাকা কম পাচ্ছেন। প্রত্যেকবার কয়েক হাজার মেট্রিক টন ধান এ ভাবেই বিক্রি হয়। প্রতিকার হয়নি আজও।