তদন্ত: ধৃতকে নিয়ে এসটিএফের তল্লাশি। নিজস্ব চিত্র
শিলিগুড়ি শহরের সব এলাকা ‘চিনতে চায়’। কারণ, পরে ফল-আনাজের ব্যবসা করবে। বুধবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা ‘ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স’(আইএসআই)-এর চর অভিযোগে ধরা পড়া গুড্ডু কুমার, তাঁকে এমনই বলেছিল বলে দাবি শিলিগুড়ির দেবাশিস কলেনির ভাড়া বাড়ির মালিকের। শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় মাসিক ৮০০ টাকায় ঘর ভাড়া নিয়েছিল গুড্ডু। বাড়ির মালিক সঞ্জয়কুমার সুশীলের টোটো চালাতো সে। কিন্তু তার আড়ালে সে ভারতীয় সেনার তথ্য পাকিস্তানে সরবরাহ করত জেনে অবাক হয়ে যাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গুড্ডুকে নিয়ে সে বাড়িতে যান রাজ্য পুলিশের ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’ (এসটিএফ)-এর কর্তারা। ঘরে তল্লাশি চালানো হয়। যদিও ঘর থেকে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি বলে এসটিএফ সূত্রে খবর।
ধৃত গুড্ডুকে বুধবার আদালতে হাজির করিয়ে ১৪ দিন হেফাজতে পেয়েছে এসটিএফ। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ এসটিএফ দফতরে পৌঁছান ভারতীয় সেনার গোয়েন্দারা। সেখানে ঘণ্টাখানেক ছিলেন তাঁরা। গুড্ডুকে এক প্রস্ত জেরার পরে, তাঁরা বেরিয়ে যান। তার পরে ধৃতকে নিয়ে দেবাশিস কলোনির বাড়িতে যায় এসটিএফ। যে ঘরে সে থাকত, সেখানে তল্লাশি চালানো হয়।
বাড়ির মালিক সঞ্জয়কুমার সুশীল বলেন, “এক বছর ধরে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল গুড্ডু। তার আগে, অন্য একটি বাড়িতে ভাড়া ছিল। বিহারে পড়াশোনা করেছে বলে জানিয়েছিল। ও মাঝেমধ্যে বলত, শিলিগুড়ি শহরের প্রতিটি এলাকা চিনতে চায়। কারণ জিজ্ঞেস করলে বলত ফল, আনাজের ব্যবসা করবে। তাই শহরের আটঘাট জেনে রাখছে।” কয়েক মাস সঞ্জয়ের ছেলেকে টিউশনও পড়িয়েছিল গুড্ডু।
এ দিন সকাল থেকে সঞ্জয়ের বাড়ির সামনে ভিড় করেছিলেন পড়শিরা। তাঁদের দাবি, গুড্ডুর ভাড়া নেওয়া ঘরে কোনও দিন কাউকে আসতে দেখেননি তাঁরা। প্রতিবেশী এক টোটো চালক গোপাল রায়ের কথা, “আমাদের সঙ্গে এনজেপি এলাকায় টোটো চালাত গুড্ডু। কারও সঙ্গে কথা বলত না। বাড়িতেও কাউকে আসতে দেখিনি। কিছু জিজ্ঞেস করলে, ঠিকঠাক উত্তর দিত না।”
গুড্ডুকে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার কথা বাড়ির মালিক পুলিশকে জানাননি। সে সূত্রে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে এসটিএফ সূত্রের খবর। বিহারের চম্পারণে গুড্ডুর পরিবারের খোঁজও নেওয়া হচ্ছে।