Step Mother

মাটিতে ছুড়ে খুন শিশুকে, কুশিদা পশ্চিমপাড়ায় ধৃত বাবা-সৎমা

লাথি মেরে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে বছর তিনেকের শিশুটির গলা চেপে ধরেছিল সৎমা। যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকা শিশুটিকে তার পরে ছুড়ে ফেলতেই মৃত্যু হয় তার।

Advertisement

বাপি মজুমদার

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২০ ০৫:১৮
Share:

অসহায়: নিহত মেয়ের দেহ কোলে দুলালি। নিজস্ব চিত্র

লাথি মেরে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে বছর তিনেকের শিশুটির গলা চেপে ধরেছিল সৎমা। যন্ত্রণায় কাঁদতে থাকা শিশুটিকে তার পরে ছুড়ে ফেলতেই মৃত্যু হয় তার। এ ভাবেই নির্যাতন করে জুলি খাতুনকে (৩) খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে রেজি বিবি ও তার স্বামী আবুল হোসেনকে। হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা পশ্চিমপাড়ায় মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ঘটনার পরে গ্রাম ছেড়ে পালাতে যায় দুই অভিযুক্ত। এলাকাবাসী তাদের তাড়া করে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। জুলির মা, আবুলের তৃতীয় স্ত্রী দুলালি বিবির অভিযোগের ভিত্তিতেই পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। দ্বিতীয় স্ত্রী রেজি শিশুর উপরে নির্যাতন চালালেও আবুল প্রতিবাদ করত না বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন গ্রামবাসীরা।

চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তান হওয়ার সময় প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে রেজিকে বিয়ে করেন পেশায় দিনমজুর আবুল। তাঁদের চার মেয়ে রয়েছে। আট বছর আগে লাগোয়া বিহারের আবাদপুর থানার বজবাড়ি এলাকার দুলালিকে বিয়ে করেন আবুল। অভিযোগ, আবুল যে বিবাহিত ও তাঁর সন্তান রয়েছে তা গোপন রেখেই দুলালিকে সে বিয়ে করে। শ্বশুরবাড়িতে এসে তা জানতে পেরে শুরু হয় অশান্তি। প্রতিবাদ করায় দুলালির উপরেও রেজি ও আবুল নির্যাতন শুরু করে বলে অভিযোগ। বছর তিনেক আগে জুলির জন্ম দেন দুলালি। বছরখানেক আগে ফের দুলালিকে বেধড়ক মারধর করায় তিনি পুলিশেও অভিযোগ জানান। বধূ নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আবুলকে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। অভিযোগ, জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরে বাড়ি ফিরে জুলিকে নিজের কাছে রেখে দুলালিকে তাড়িয়ে দেয় আবুল। ফের পুলিশের দ্বারস্থ হন দুলালি। জুলিকে পুলিশ দুলালির কাছে ফিরিয়েও দেন। মেয়েকে নিয়ে এর পর বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেন দুলালি। অভিযোগ, কিছু দিন বাদে রাস্তায় দুলালিকে দেখে তাঁর কাছ থেকে জুলিকে কেড়ে নিয়ে নিজের কাছে রাখেন আবুল।

প্রতিবেশী তথা প্রত্যক্ষদর্শী মঞ্জুরি বিবি বুধবার বলেন, ‘‘ওইটুকু মেয়েকে যে কেউ এ ভাবে মেরে ফেলতে পারে ভাবতেই পারছি না।’’

কুশিদা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহম্মদ নুর আজম বলেন, ‘‘এমন যে হতে পারে ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। ওদের কঠোর শাস্তি হোক এটাই চাই।’’ আর দুলালি বলেন, ‘‘মেয়েটাকে জোর করে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে এসেছিল। মেয়ের জন্য কষ্ট হত। কত বার ওকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য স্বামীকে বলেছি। কিন্তু দেয়নি। আমার কাছে থাকলে মেয়েটাকে মরতে হত না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement