চা এবং পাট শিল্প সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভালের জন্য নতুন একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী গড়ে দিল রাজ্য সরকার। গত সোমবার এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে।
মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রধান করা হয়েছে রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী অমিত মিত্রকে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্য মন্ত্রীরাও এই গোষ্ঠীতে রয়েছেন। রাজ্য সরকারের এই ঘোষণার পরে টি ডিরেক্টরেটের আর কোনও গুরুত্বই থাকল না বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। অস্তিত্ব থাকল না চা বিষয় আগের মন্ত্রিগোষ্ঠীরও।
সূত্রের খবর, তৃণমূল সরকারের আমলে চা বিষয়ক একাধিক সরকারি কমিটি, সংস্থা, পর্ষদ গড়ার ঘোষণা হয়েছে। তার ফলে কোনও সংস্থা বা কমিটি কী কাজ করবে তা নিয়েই শুরু হয় বির্তক। বন্ধ বাগান খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াও দীর্ঘমেয়াদি হয়ে পড়ে। সে কারণেই নতুন কমিটি গড়া হয়েছে বলে দাবি। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে তা উল্লেখ করা হয়েছে বলেও দাবি। বিজ্ঞপ্তিতে সাফ উল্লেখ্য করা হয়েছে এই সম্পর্কিত আগের সব নির্দেশিকার পরিবর্তে এটি গ্রাহ্য হবে।
নতুন মন্ত্রিগোষ্ঠীতে অমিতবাবু-পার্থবাবুরা ছাড়াও খাদ্য সরবারহ মন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রী, শ্রম মন্ত্রী, পর্যটন মন্ত্রী এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রয়েছেন। মাসে একবার গোষ্ঠীর বৈঠক হবে। প্রতিটি বৈঠকে আমন্ত্রিত হিসেবে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী উপস্থিত থাকবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সৌরভবাবু মন্ত্রী নন বলে সরাসরি কমিটিতে না রেখে প্রতি বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। গত সোমবারের তারিখে বিজ্ঞপ্তি সই হলেও, এ দিনই তা রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশ করেছে রাজ্য। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে কমিটির প্রথম বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে।
বন্ধ বাগানের বিষয় দেখভালের জন্য একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী ছিলই। শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু সেই গোষ্ঠীর প্রধান ছিলেন। তৃণমূল সরকার দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে টি ডিরেক্টরেট গঠন করে। মন্ত্রিগোষ্ঠী নাকি টি ডিরেক্টরেট নাকি শিল্প-শ্রম দফতর কারা চা বাগান নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। চা বাগান বিষয়ক একটি মামলায় এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে অস্বস্তিতেও পড়তে হয়। তারপরেই ডিরেক্টরেটের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন পদের অবলুপ্তি ঘটিয়ে দেয় সরকার।
বিধায়ক সৌরভবাবু ডিরেক্টরের চেয়ারম্যান ছিলেন। ওই ঘটনায় সৌরভবাবুর গুরুত্ব কমানো হয়েছে বলেও শাসকদলের অন্দরেই চর্চা শুরু হয়। যদিও, এবারে মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে বিধায়ক সৌরভবাবুকে উপস্থিত থাকার সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায়, গুরুত্ব বেড়েছে বলে পাল্টা দাবি করেছেন তাঁর অনুগামীরা। সৌরভবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি।