প্রতীকী ছবি
শিশুদের অপুষ্টি জনিত রোগ দূর করতে এবং রোগ প্রতিরোধক শক্তি বাড়াতে নবজাতক শিশুদের প্রয়োজন হলুদ দুধ, এমনটাই মনে করেন অনেক স্বাস্থ্যবিদ। শিশুর জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের শরীর থেকে যে হলুদ রঙের দুধ নির্গত হয়, সেই দুধেই রয়েছে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা ও অন্য অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ। কিন্তু অনেক মায়ের শারীরিক সমস্যার জন্য নবজাতকদের এই দুধ মেলে না। সেই সব শিশু দুর্বল হয়েই জীবনের যাত্রা শুরু করে। তাই শিশুদের সুস্থ ও সবল করতে এই দুধ খাওয়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ‘মধুর স্নেহ’ নামের এক প্রকল্প নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রতি মাসে প্রায় ২ হাজারটি শিশুর জন্ম হয় (প্রাতিষ্ঠানিক হিসেবে)। এদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ শিশু অপুষ্টি জনিত অসুখে আক্রান্ত হয়। এই অপুষ্টির কারণ হিসেবে উঠে এসেছে বেশ কিছু গুরুতর বিষয়। প্রধানত, কম বয়সী মেয়েদের মা হবার কারণে শিশুরা অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়। অনেক মায়েদের শরীরে এই হলুদ দুধ কম থাকায় শিশুরা অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে অপুষ্টি দূর করতে এই মধুর স্নেহ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে সব মায়েদের শরীরে হলুদ দুধ কম রয়েছে সেইসব শিশুদের এই দুধ সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি, হাসপাতালে শিশুর জন্ম হওয়ার পরের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের শরীরের হলুদ দুধ খাওয়ানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলায় গত বছর ৯৩ শতাংশ শিশুকে দুধ খাওয়াতে সক্ষম হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। আগামী দিনে একশো ভাগ শিশুকে এই দুধ খাওয়াতে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর।
সূত্রের খবর, এ জন্য জেলায় একটি ‘মিল্ক ব্যাঙ্ক’ তৈরির ভাবনা রয়েছে। সেই ব্যাঙ্কে এই হলুদ দুধ সংরক্ষিত করা হবে। যে সব মায়েদের শরীরে অতিরিক্ত হলুদ দুধ রয়েছে তাঁদের থেকে এই দুধ সংগ্রহ করে মিল্ক ব্যাঙ্কে রাখা হবে। তার পরে প্রয়োজন অনুযায়ী অন্য নবজাতকদের এই দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করবে স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখনও এই মিল্ক ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ শুরু হয়নি, তবে হলুদ দুধ খাওয়ানোর উপকারিতা বোঝাতে প্রচার শুরু হয়েছে। প্রতি বছরের অগস্টের প্রথম সপ্তাহ জুড়ে ‘মাতৃদুগ্ধ পান’ সপ্তাহ পালন করা হয়। এ ছাড়াও গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে এই দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর কাজও চলছে বলে খবর।