ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি পুরভোটের আসন সংরক্ষণের চূড়ান্ত তালিকা সোমবার প্রকাশ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। শেষবার যে খসড়া তালিকা বের হয়েছিল সেটাই চূড়ান্ত করা হয়েছে। সোমবার ওই তালিকা বেরনোর পরেই কোথায় কে প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে হিসেব নিকেশ শুরু হয়ে গিয়েছে এ দিন থেকেই। ওয়ার্ড সংরক্ষণের জেরে হেভিওয়েট নেতাদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে চিন্তা বেড়েছে বাম, তৃণমূল দুই দলেই।
গত শনিবার সর্বদল বৈঠকে জেলা নির্বাচন আধিকারিক তথা জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি রাজনৈতিক দলগুলিকে সংশোধিত খসড়া তালিকা দিয়ে দেন। সেই তালিকা নিয়ে কিছু আপত্তি তুলেছিল বিজেপি এবং সিপিএম। এ দিন জেলা প্রশাসন সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশের পরে মেয়র অশোক ভট্টচার্য বলেন, ‘‘আপত্তি থাকলেও আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছি না। না হলে মানুষের অসুবিধা বাড়বে।’’ তালিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট বিজেপি অবশ্য আইনের রাস্তা খুঁজছে। দার্জিলিং জেলা বিজেপি সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল বলেন, ‘‘আইনজীবীদের সঙ্গেও পরামর্শ করছি আমরা।’’ বিযয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে দলের ভিতরেও।
এ দিন তালিকা হাতে পেয়েই রাজনৈতিক দলগুলি প্রার্থী বাছাইয়ের সমীকরণে মন দিয়েছে। মন্ত্রী ও উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেবকে মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে সামনে রেখেই শিলিগুড়িতে পুর নির্বাচন লড়তে চলেছে তৃণমূল। ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাঁর দাঁড়ানোর কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু সেটি এ বার মহিলা সংরক্ষিত হয়েছে। এখন গৌতম কোন ওয়ার্ড থেকে লড়বেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারের ২০ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষণের আওতায় পড়েছে। তিনি এ বার কোথায় দাঁড়াবেন, তা ঠিক হয়নি। রঞ্জন বলেন, ‘‘দল যা মনে করবে, সেটাই হবে। আমাদের নির্বাচন কমিটি ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’’ তৃণমূলের প্রয়াত কাউন্সিলর কৃষ্ণ পালের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডও মহিলা সংরক্ষিত হয়েছে।
প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বাম শিবিরেও। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন। এ বার দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত ছিল, ২৮ নম্বর থেকে তাঁর লড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই ওয়ার্ডে গতিবিধিও বাড়িয়েছিলেন অশোক। কিন্তু ২৮ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় নতুন অঙ্ক কষতে শুরু করেছে সিপিএম। মেয়র বলেন, ‘‘দল এবং শরিকদের সঙ্গে আলোচনার পর কংগ্রেসের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনায় বসা হবে। তারপরেই সব ঠিক হবে।’’ পুর চেয়ারম্যান তথা সিপিএম নেতা দিলীপ সিংহের ওয়ার্ডও মহিলা সংরক্ষিত গিয়েছে। তিনি কোথা থেকে দাঁড়াবেন, তা নিয়েও আলোচনা বাকি।
ঘর গোছাচ্ছে বিজেপিও। তাদের হিসেব, এ বার অনেক আসন বাড়তে পারে। তাই প্রার্থী বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়াত জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরীর অবর্তমানে দলের ভিতরে যাতে আসন বণ্টন নিয়ে কোনও কোন্দল না হয়, সে ব্যাপারে নেতারা সাবধানে পা ফেলার চেষ্টা করছেন বলে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত।