কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: স্বরূপ সরকার
উপাচার্যহীন, ফিনান্স অফিসারহীন, রেজিস্ট্রারহীন অবস্থায় জটিলতা ক্রমশই বাড়ছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মী, আধিকারিকদের সংগঠনগুলো কলকাতায় গিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করতে উদ্যোগী হচ্ছে। অন্য দিকে, ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য ঠিক করা গেলেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের করা যাচ্ছে না কেন, তা নিয়ে শনিবার জেলা সিপিএমের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত এ দিন বলেন, ‘‘এখনও কোনও নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি।’’
রাজ্যপালের সঙ্গে এ দিন বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে যান দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। সাংসদের দাবি, রাজ্যপালের সঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং দার্জিলিং হিল ইউনিভার্সিটি নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘উপাচার্যহীন, ফিনান্স অফিসারহীন, রেজিস্ট্রারহীন পরিস্থিতিতে কী-কী সমস্যা তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং পড়ুয়াদের পড়াশোনার যে ক্ষতি হচ্ছে, তা রাজ্যপালকে বলেছি। ফিনান্স অফিসারের দায়িত্ব কাউকে না দেওয়া পর্যন্ত হস্টেলে খাবারের সমস্যার বিষয়টি জেলা প্রশাসনের তরফে যাতে দেখা হয়, সে জন্যও রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছি। সেই সঙ্গে দার্জিলিং হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কটজনক পরিস্থিতির কথাও জানিয়েছি।’’
সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, ‘‘৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাকিগুলোর অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হয়ে গেলেও, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল না কেন? শাসক দল দিদির সুরক্ষা কবচের কথা বলছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কেন সুরক্ষা কবচ পাচ্ছে না?’’ আচার্যের কাছে তাঁদের দাবি, অবিলম্বে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হোক। দাবি, যত দিন না তা হচ্ছে, অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য, ফিনান্স অফিসার, রেজিস্ট্রার নিয়োগ করা হোক, যাতে পঠনপাঠন, হস্টেল চালু রাখা, শিক্ষক-কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে না যায়।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আচার্য তথা রাজ্যপালের মতানৈক্য ঘটছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। জীবেশ সরকারদের বক্তব্য, দু’তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে উপাচার্যের যে নাম গিয়েছে, আচার্যের হয়তো তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাঁদের দাবি, শিক্ষা দফতরকে সমস্যার মীমাংসাকরতে হবে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে যে সব আন্দোলন হচ্ছে, সমিতি তাকে সমর্থন করবে। সংগঠনের সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডল জানান, সেই সঙ্গে সমস্যা সমাধানের দাবিতে আচার্য, উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান তাঁরা। অস্থায়ী শিক্ষাকর্মী অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জয়েন্ট রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মী,আধিকারিক, পড়ুয়াদের সব সংগঠনকে নিয়ে সোমবার জরুরি বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বৈঠকের লক্ষ্য— এক যোগে কলকাতায় গিয়ে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানানো।