তোড়জোড়: আজ শুরু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। তারই প্রস্তুতি ধূপগুড়ি। নিজস্ব চিত্র।
ফারাকটা এ বারও স্পষ্ট। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। উত্তরের দুই জেলা আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে পরীক্ষার্থীদের সংখ্যার এই ফারাক নিয়ে শিক্ষা মহলে চলছে চর্চা। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি ছেলেদের মধ্যে স্কুলছুট বাড়ছে? উচ্চ মাধ্যমিকের পরে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাও শুরু হয়েছে আলিপুরদুয়ারে।
সূত্রের খবর, কোচবিহারে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় গত বছরের হিসেবে মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় তিন হাজারের মতো বেশি ছিল। এ বার সে ফারাক সাড়ে চার হাজারের বেশি। কোচবিহার জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সমরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘মেয়েদের পড়ার আগ্রহ অনেক বেড়েছে। কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে মেয়েরা। ছাত্রের সংখ্যা গত কয়েক বছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক— দু’ক্ষেত্রেই কম।’’ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইজ়ারি কমিটির আহ্বায়ক মানস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুলছুট ছাত্রদের মধ্যে বেড়েছে কি না, বলা সম্ভব নয়। তবে ছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়ছে।’’
কোচবিহারের দেওয়ানহাট হাইস্কুল থেকে এ বার ৩১০ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার মধ্যে ১৬৫ জন ছাত্রী। প্রধানশিক্ষক জয়ন্ত পাল বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে বরাবর ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি। তা আরও বেড়েছে।’’ দিনহাটার ঠাকুর পঞ্চানন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সজল সাহা বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল থেকে এ বার ৭৯ জন পরীক্ষা দিচ্ছে। তার ৫০ জন মেয়ে। তবে করোনার সময় থেকে ছাত্র ও ছাত্রী, দু’ক্ষেত্রেই স্কুলছুট বেড়েছে।’’
গত বছরের তুলনায় এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে আলিপুরদুয়ার জেলায় মেয়েদের সঙ্গে ছেলেদের সংখ্যার ফারাক দু’গুণেরও বেশি। সূত্রের খবর, উচ্চ মাধ্যমিকে গত বছর আলিপুরদুয়ার জেলায় মেয়েদের সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় প্রায় দেড় হাজার বেশি ছিল। এ বছর সে ফারাক বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩,৩০০। তবে জেলার শিক্ষকদের একাংশের কথায়, চা বাগান ও জঙ্গলে ঘেরা আলিপুরদুয়ার জেলার অনেক পড়ুয়াই মাধ্যমিকের পরে, ‘ডিফেন্স’-এর চাকরির দিকে ঝুঁকে পড়ে। অনেকে আবার প্রযুক্তিগত শিক্ষার দিকে যায়।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইজ়ারি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ভাস্কর মজুমদার বলেন, “পরীক্ষার্থীদের সংখ্যার এই ফারাকটা আমাদের নজরেও এসেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে অনুরোধ করব।”