সহভোজে নড্ডা। নিজস্ব চিত্র।
মাথায় বেতের কৃষক টুপি, হাতে লাঙল। পুরাতন মালদহের ডিস্কো মোড়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডার সহভোজের আসরে প্রবেশ পথের পাশেই দ্বিতীয় স্টলে বসে পাঁচ জন। এক জন, বিজেপির পাঁচ নম্বর মণ্ডলের কোষাধ্যক্ষ। পাশের স্টলেই ওই মণ্ডলেরই আরেক নেতা। এক নেতা বলেন, ‘‘দল করলেও আমাদের পেশা চাষবাস। তাই কৃষকদের স্টলে আমরাই রয়েছি।’’
শনিবার দুপুরে বিজেপির সহভোজ আসরের কৃষকদের স্টলে দলেরই নেতাদের উপস্থিতি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সহভোজের আসরে বিজেপির দাবি মতো কৃষকদের হাজিরা না থাকায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্রের কৃষি আইনে বিভ্রান্ত জেলার চাষিরা। তাই বিজেপির সহভোজে চাষিদের হাজিরা কম। মাঠ ভরাতে বিজেপি নেতাদেরই কৃষক সাজতে হয়েছে। যদিও সহভোজে কৃষকদের ভালো সাড়া রয়েছে বলে দাবি করেছেন খোদ নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘১০ জানুয়ারি সহভোজ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। সেই সময় ৪০ হাজার গ্রামসভায় সহভোজ কর্মসূচি কার্যকর করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে, আমরা ৩৩ হাজার গ্রামসভায় সহভোজ করেছি।’’
সহভোজের জন্য শুক্রবার বিকেল থেকেই খিচুড়ি, মেশানো তরকারি রান্নার কাজ শুরু হয়েছিল। বিজেপির দাবি, সহভোজে ৩২০০ কৃষক হাজির থাকার কথা ছিল। তবে নড্ডার সঙ্গে সহভোজে হাজির ছিলেন হাজার খানেক কৃষক বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতাদেরই একাংশ। কৃষকদের হাজিরা লক্ষ্যমাত্রার থেকে কম থাকায় শুরু হয়েছে চর্চা। বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, দুই কর্মসূচি একসঙ্গে থাকায় বাছাই করা কৃষকেরাই সহভোজের আসরে যোগ দিয়েছেন। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তৃণমূলের কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘কৃষকদের নিয়ে সহভোজের কথা বলা হলেও শুনেছি আসর ভরিয়েছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরাই। কারণ, কেন্দ্রের কৃষি আইন নিয়ে কৃষকেরা অসন্তোষে রয়েছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সহভোজ না করে দিল্লির আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল।’’ বিজেপির মালদহের জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কৃষকদের উপস্থিতিই প্রমাণ করে দেয়, বাংলার চাষিরা বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। তাই তৃণমূলের কথায় আমরা কোনও আমল দিচ্ছি না।’’