গত বছর একুশে এমন ভিড় হয়েছিল।
গ্রাম থেকে শুরু করে শহর। একুশের সমাবেশ নিয়ে ট্যাবলোর মাধ্যমে চালানো হয়েছিল প্রচার। এমনকি, পথসভা থেকে শুরু করে র্যালিও করা হয়েছিল জেলা জুড়েই। সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই একশের সমাবেশ নিয়ে জোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল মালদহের তৃণমূলের অন্দরে। ইতিমধ্যে কলকাতায় পৌঁছেও গিয়েছেন হাজার খানেক তৃণমূল কর্মী,সমর্থক। তবে স্লগওভারে শনিবার তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের কলকাতামুখী হওয়ার হিড়িক দেখা গেল না মালদহে। আর তা নিয়েই চর্চা শুরু হয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরেই।
রাজনৈতিক মহলে, মালদহ কংগ্রেসের ঘাঁটী হিসেবে পরিচিত। তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসকে টেক্কা দিয়েছিল তৃণমূল। আর দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। তবে লোকসভা নির্বাচনে ছবিটা বদলে যায় জেলায়। মালদহের দুটি আসনের মধ্যে উত্তর মালদহে জয়ী হয় বিজেপি। দক্ষিণ মালদহে কংগ্রেস জয়ী হলেও বিজেপির থেকে ব্যবধান ছিল মাত্র আট হাজার। কংগ্রেস থেকে মৌসম নূরকে ভাঙিয়েও লাভ হয়নি তৃণমূলের। এরই মধ্যে মৌসম নূরকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি করা হয়। একুশের সমাবেশে রেকর্ড সংখ্যক কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেন দলের নয়া সভাপতি মৌসম নূর।
তাই মালদহ জেলা জুড়েই ট্যাবলোর মাধ্যমে চালানো হয় প্রচার। এছাড়া জেলার পাশাপাশি ব্লকে ব্লকে সভা, মিছিল করা হয় একুশের সমাবেশে জমায়েত নিয়ে। আর একুশের সমাবেশে দলীয় কর্মী, সমর্থকদের কলকাতামুখী করতে প্রায় ৯০টি বাস ভাড়া নেই তৃণমূল। দলীয় নেতৃত্বের দাবি, প্রতিটি বাসে কমপক্ষে ৪০জন করে যাত্রী ছিলেন। এছাড়া নেতাদের নিজস্ব গাড়িও গিয়েছে। একই সঙ্গে ট্রেনে করেও কর্মী, সমর্থকেরা কলকাতায় গিয়েছেন। ফলে এবারে জেলা থেকে কমপক্ষে ১৫ হাজার কর্মী, সমর্থক কলকাতায় গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মৌসম। তিনি বলেন, শনিবার দুপুর পর্য়ন্ত প্রায় ১৫ হাজার কর্মী, সমর্থক কলকাতায় হাজির হয়েছেন। রবিবার সেই সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।
তবে স্লগওভারে কর্মী, সমর্থকদের কলকাতামুখী হওয়ার হিড়িক দেখা গেল না জেলায়। শেষ দিনে কেন হিড়িক কম? পুরাতন মালদহের বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী, হরেন সিংহ, দিলু দাসেরা বলেন, “নেতারা আগেই চলে গিয়েছেন কলকাতায়। দিন মজুরি করে আমাদের সংসার চালাতে হয়। কলকাতায় গিয়ে দু’দিন থাকা মানে পাঁচশো টাকা খরচ। তাই অনেকে শেষদিনে একুশের সমাবেশে যোগ দিতে যান। এবারে নেতারা আগে চলে যাওয়ায় শেষ দিনে কর্মী,সমর্থকেরা বিপাকে পড়েছেন।” তৃণমূলের একাংশ নেতৃত্বের দাবি, ঠগত, বছর পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের বিষয় ছিল। তাই পদ পাওয়ার আশায় লোক দেখানোর জন্য অনেকেই দায়িত্ব নিয়ে কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে গিয়েছিলেন। এবারে সেই বিষয না থাকায় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদেরও উৎসাহ নেই।” মৌসম বলেন, “ব্লকের কর্মীদের কলকাতা যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।”