প্রতীকী ছবি।
জ্বর, সদি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কোচবিহার থেকে ‘নাইসেড’-এ নমুনা গেল। অথচ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে কোনও নমুনা পাঠানোর ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে শিশুরা ভর্তি হচ্ছে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে। অন্তত ২৬ জন এ দিন দুপুর পর্যন্ত ভর্তি ছিল। তাদের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু তাদের কেউ অ্যাডিনোভাইরাস বা অন্য কোনও সংক্রমণে আক্রান্ত কি না, তা খতিয়ে দেখার কোনও ব্যবস্থা এখনও করা হয়নি।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ‘ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গন্যাস্টিক ল্যাবরেটরি’ (ভিআরডিএল)-তে ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ এবং ইফ্লুয়েঞ্জা-বি পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। শিশুদের নমুনা নিয়ে সেই পরীক্ষাও আদৌ হচ্ছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এ দিন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১০ জন শিশুর নমুনা কলকাতার ‘নাইসেড’-এ পাঠানো হয়েছে। কোচবিহার মেডিক্যালের সুপার রাজীব প্রামাণিক বলেন, ‘‘রাজ্যের ঠিক করা সংস্থার মাধ্যমেই নমুনা নাইসেডে পাঠানো হচ্ছে। দিনকয়েক আগে, ভিডিয়ো কনফারেন্সের বৈঠকে তা জানানো হয়েছিল। সে মতো আমরা নমুনা পাঠিয়েছি।’’ যদিও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, ‘‘নমুনা পাঠানোর কোনও নির্দেশ এখনও আমাদের কাছে আসেনি বলেই ভিআরডিএল সূত্রে জানতে পেরেছি।’’ ভিআরডিএল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সাত-দশ দিনের মধ্যে তা অ্যাডিনোভাইরাস পরীক্ষার কিট মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধীনে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের আউটডোরে শুক্রবার থেকে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের জন্য বিশেষ ক্লিনিক চালু হল। এই ক্লিনিকে চিকিৎসকদের পাশাপাশি, এক জন কাউন্সেলর থাকবেন। শিশুর অভিভাবকদের সচেতন করবেন তিনি। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার কল্যাণ খান বলেন, ‘‘অ্যাডিনোভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আসা শিশুদের সব ধরনের প্রয়োজনীয় পরিষেবা চালু করা হয়েছে। একই সঙ্গে সচেতনতা বাড়াতেও কাউন্সিলর নিয়ে বিশেষ ক্লিনিকও শুরু হল। জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের স্কুলে না পাঠানোর জন্য আবেদন জানানো হচ্ছে।’’ জলপাইগুড়ি জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত অ্যাডিনোভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৫৪টি শিশু।
অ্যাডিনোভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোনও শিশুর মৃত্যু হলে তার আনুষঙ্গিক অসুস্থতা (কোমর্বিডিটি) ছিল কি না, ডেথ সার্টিফিকেটে তার উল্লেখ করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরে দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক হয়েছে সব জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। সে বৈঠকে রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, অ্যাডিনোভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আসা সব শিশুকেই ভর্তি করানোর প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে, গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা টেলি-মেডিসিন পরিষেবায় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। অযথা জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের শয্যা আটকে না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কথায় কথায় ‘রেফার’ না করার কথাও বলা হয়েছে। গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।