প্রতীকী চিত্র
কোথাও তারস্বরে বাজছে মাইক। কোথাও আবার কান ঝালাপালা করে গর্জে যাচ্ছে ডিজে। আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পুলিশের সতর্কতা জারি হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও একাধিক বিধি-নিষেধের কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতেও যেন হুঁশ নেই অনেকের। পরীক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা ভুলেই চলছে মাইক ও ডিজে-রাজ।
সোমবার সন্ধ্যার পরে একাধিক এলাকায় ছবিটা ছিল এমনই। ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে বিয়ের আসর, কোথাও আবার পিকনিকেও মাইক বাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই তালিকায় যেমন রয়েছে কোচবিহার শহর এলাকার নাম, তেমনই শহর সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু করে গ্রামের দিকেও মাইক বাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে সীমান্ত সংলগ্ন একাধিক এলাকায় মাইক বেজেছে বলেও অভিযোগ।
কোচবিহার জেলা পুলিশের ‘ফেসবুক পেজ’-এ রবিবারই এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। সেই পোস্টেই এক ব্যক্তি মাইক বাজানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “ওই বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আমাদের কড়া নজর রয়েছে।”
কোচবিহার জেলায় এ বারে ৩৮ হাজারের উপরে ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছে। সব মিলিয়ে ১২৭টি পরীক্ষাকেন্দ্র। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে থেকে সব জায়গায় শব্দ-বিধি লাগু হয়েছে। কিন্তু তাতে কেউই তেমন গুরুত্ব দেননি বলেই অভিযোগ। রবিবার জেলার বহু জায়গাতেই ডিজে ও মাইকের ব্যবহার হয়েছে। খাগরাবাড়ি, টাকাগাছ, পুন্ডিবাড়ি থেকে শুরু করে দেওয়ানহাট, ভেটাগুড়ি থেকে সীমান্ত এলাকা নাজিরহাট-সহ বহু গ্রাম থেকেই এমন অভিযোগ রয়েছে। অভিভাবকদের অনেকেই ক্ষুব্ধ। কিন্তু প্রকাশ্যে তা নিয়ে কেউ কিছু বলতে চাননি। এক অভিভাবকের কথায়, “অভিযোগ জানাতে গেলে গ্রামেরই অনেকে রাগ করবেন। তাই চুপ থাকাই ঠিক মনে করছি।”
ওই বিষয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে আরও বেশি সচেতনতা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা এর আগে সতর্কতা অভিযানে দেখেছি, যে বাড়িতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রয়েছে, সেই বাড়ির অভিভাবকদের কেউ না কেউ মাইক বাজানোর সঙ্গে যুক্ত।”
আর এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘ছেলেমেয়েরা জীবনে প্রথম বড় পরীক্ষায় বসছে। এই বিষয়ে সকলেরই ভাবা উচিত।’’ পরীক্ষার্থীদের অনেকেই জানিয়েছে, বেশি রাতের দিকে অথবা ভোরের দিকেই তারা পড়াশোনা করে। কিন্তু বিকেলে র পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় মাইক ও ডিজে বাজানোর ফলে তাদের সমস্যা হচ্ছে। কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “আমরা সব জায়গায় ওই বিষয়ে সতর্ক করেছি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার চলছে। তার পরেও এমন অভিযোগ পেলে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”