ফাইল চিত্র।
খবরটা শুনেই বুকটা ছাঁৎ করে উঠেছিল কানন দত্তের। মানুষটা আর নেই! এই মানুষটাকে নিয়েই তো শাশুড়ি সন্ধ্যারানি দেবীর কাছ থেকে কত গল্প শুনেছেন তাঁরা। রুপোলি পর্দার এক জন মানুষ জলজ্যান্ত থাকতেন কিনা তাঁদের বাড়ির একটি অংশ ভাড়া নিয়ে! যাঁকে রোজ দেখা যায়, শোনা যায় তাঁর কথা, হাসির শব্দ। এখন এই সব স্মৃতির অ্যালবাম খুলে বসেছেন কানন।
কাননের স্বামী বিমান দত্ত বলছিলেন, শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় কলেজের কাছে তাঁদের যে বাড়ি, সেখানেই ভাড়া থাকলেন সৌমিত্রর দাদা-বৌদি। বলেন, ‘‘সেই সুবাদে কৃষ্ণনগরের বাড়ি থেকে এখানে এসে মাঝেমধ্যেই কাটাতেন সৌমিত্রবাবু। আমরা সে সময় ছোট। এই ঘরের ভিতর দিয়ে দৌঁড়ঝাঁপ করে খেলতাম।’’ কাননের কথায়, ‘‘শাশুড়ি বলতেন, সৌমিত্র বিয়ের সময় আমন্ত্রণ করেছিলেন। যেতে পারেননি ওঁরা। তবে তাঁর বউয়ের জন্য তিনি একটি শাড়ি কিনেছিলেন। বিয়ের পর দার্জিলিঙে বেড়াতে এলে নতুন বউকে দিয়েছিলেন সেই উপহার।’’
স্মৃতিভারে আক্রান্ত শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যও। বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে সৌমিত্রবাবু অনেক আগে মাঝেমধ্যে এসে থাকতেন। সেটা আমি দেখেছি। আমি তখন পড়াশোনা করছি।’’
তাঁর সঙ্গেও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হৃদ্যতা ছিল। তিনি মন্ত্রী হওয়ার পরে সৌমিত্রবাবু শিলিগুড়িতে এলে ভট্টাচার্য বাড়িতে প্রায়ই যেতেন। বিধায়ক-পত্নী রত্নাদেবীর হাতের লুচি-পায়েস ছিল তাঁর অন্যতম প্রিয়। বছর দুয়েক আগে বিধায়কের লেখা ‘তিন প্রজন্মের নগরায়ণ’ বইটি তাঁর হাত দিয়েই উদ্বোধন হয়। বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি করোনা আক্রান্ত হলে দ্রুত সুস্থ হওয়ার কামনা করেছিলেন। তিনি অসুস্থ হলে আমি লিখে পাঠিয়েছিলাম, ‘ফাইট সৌমিত্রদা ফাইট’। কিন্তু এ ভাবে হেরে যাবেন, ভাবিনি।’’