অপেক্ষায়: লাইমন বিবি, বেবি বিবি, মাহাজুরা বিবি, শুকতারা বিবি (বাঁ দিক থেকে) দাবি করলেন বহুবার দুয়ারে সরকার শিবিরে এবং বিডিও অফিসে গিয়ে আবেদন করেও তাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাননি। মালদহ। নিজস্ব চিত্র।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধে পেতে তিনটি দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন করেন কয়েক জন মহিলা। বিডিও অফিসেও দু’বার লাইনে দিয়ে আবেদন করেছেন বলে দাবি করলেন। কিন্তু সেই প্রকল্পের টাকা এখনও তাঁরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই চিত্র মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের বুধিয়া, শৌলপুর-সহ একাধিক গ্রামে। ওই মহিলাদের দাবি, একই সঙ্গে গ্রামের অন্যান্য যে মহিলারা আবেদন করেছিলেন, তাঁরা ওই প্রকল্পের অনুদান নিয়মিত পাচ্ছেন। তাঁদের প্রশ্ন, বারবার আবেদন করেও তাঁরা কেন বঞ্চিত? প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে।
নরহাট্টা পঞ্চায়েতের শৌলপুর গ্রামের বাসিন্দা লাইমন বিবি। স্বামী বাবলু শেখ দিনমজুরি করেন। তাঁদের সাত কন্যা সন্তান। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধে পেতে শৌলপুর প্রাইমারি স্কুলে দুয়ারে সরকার শিবিরে তিনবার আবেদন করেছিলেন লাইমন। কাজ না হওয়ায় পরে একবার নরহাট্টা হাই স্কুলে গিয়ে দুয়ারে সরকার শিবিরে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখনও প্রকল্পের সুবিধা পাননি বলে জানালন। লাইমন বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা পেলে আমার সংসারের অনেক কাজে লাগত। কিন্তু দুয়ারের সরকার শিবিরে চারবার আবেদন করেও প্রকল্পের সুবিধা পাইনি।’’
ওই পঞ্চায়েতেরই ডুবুরি বুধিয়া গ্রামের বধূ বেবি বিবির পরিস্থিতিও একই রকম। তিনি বলেন, ‘‘বুধিয়া হাই মাদ্রাসায় প্রথম যখন দুয়ারে সরকার শিবির বসেছিল, সেবার থেকে পরে আরও দু’বার লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধে পেতে আবেদন করেছিলাম। এ ছাড়া ইংরেজবাজার বিডিও অফিসে গিয়েও দু’বার আবেদন করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্পের সুবিধে পেলাম না। পাঁচবার আবেদন করে এখন হাল ছেড়ে দিয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতিবেশী অনেকেই একই সঙ্গে দুয়ারের সরকার শিবিরে আবেদন করে এখন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন, অথচ আমি বঞ্চিত।’’ একই গ্রামের মাহাজুরা বিবি বলেন, ‘‘আমি দুয়ারে সরকার শিবিরের দু’বার এবং বিডিও অফিসে একবার আবেদন করেছিলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত পাইনি সুবিধে।’’ কই গ্রামের বাসিন্দা শুকতারা বিবিরও একই অভিযোগ।
ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এই ধরনের অভিযোগ কেউ করেননি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) মৃদুল হালদার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে থাকা সংশ্লিষ্ট মহিলাদের তথ্য, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের পোর্টালে সম্ভবত আপলোড না হওয়াতেই ওই মহিলারা প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন না। এই সমস্যা মেটাতে কাজ চলছে।’’