বন্ধ কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুল। — নিজস্ব চিত্র।
কোচবিহারে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে স্কুল এবং কলেজ ধর্মঘটের ডাক দিল এসএফআই এবং ডিএসও-র মতো ছাত্র সংগঠন। তার জেরে জেলা জুড়ে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। তবে কয়েকটি জায়গায় পরীক্ষা থাকায় তা ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে বলে ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে দাবি করা হয়েছে। কোচবিহারের ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সাত দিন ধরে লড়াই চালানোর পর বুধবার কোচবিহারের এমজেএন হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই ‘নির্যাতিতা’র। এর পর এসএফআই এবং ডিএসও বৃহস্পতিবার জেলা জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ধর্মঘট পালনের ডাক দেয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ছাত্র ধর্মঘটের প্রভাব লক্ষ্য করা যায় জেলার স্কুল এবং কলেজগুলিতে। কোচবিহার জেলায় প্রায় সমস্ত স্কুল বন্ধ। বন্ধ কলেজগুলিও। এসএফআইয়ের কোচবিহার জেলার সভাপতি কৌশিক ঘোষ বলেন, ‘‘যে সব জায়গায় পরীক্ষা রয়েছে সেগুলি আমরা ধর্মধটের আওতার বাইরে রেখেছি। ওই ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে ধর্মঘটে শামিল হয়েছে।’’
ডিএসওর জেলা সম্পাদক আসিফ আলম বলেন, ‘‘নির্যাতিতার মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল আমরা জেলা জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ধর্মঘট পালনের ঘোষণা করেছিলাম। রাত পর্যন্ত আমরা মাইকে প্রচার চালিয়েছি। আজ জেলা জুড়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’’
বৃহস্পতিবারই কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। প্রথমে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে দফতরে প্রবেশ করতে যান। কিন্তু পুলিশ বাধা দেওয়ায় তাঁরা রাস্তায় বসে পড়েন। দফতরের সামনেই তাঁরা স্মারকলিপি পুড়িয়ে ফেলেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের সবুজ চুড়ি উপহার দেন তাঁরা। ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবি তোলেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ জুলাই ওই নাবালিকা স্কুলে গিয়েছিল। কিন্তু অসুস্থ বোধ করায় সে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছিল। অভিযোগ, সেই সময় কয়েক জন যুবক তাকে তুলে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও ওই নাবালিকা বাড়ি না ফেরায় তার পরিবারের সদস্যেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এর পর গত ২০ জুলাই পুণ্ডিবাড়ি থানায় মিসিং ডায়েরি করে তার পরিবার। অবশেষে তাঁরা জানতে পারেন কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ওই নাবালিকা। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে বাপ্পা বর্মণ নামে মূল অভিযুক্ত-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। রুজু হয়েছে অপহরণের মামলাও।