সমাগম: মালদহের নুর ম্যানসনে দলনেত্রীর ভার্চুয়াল সভা দেখছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র
এক দিকে বিধিভঙ্গের অভিযোগ। অন্য দিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ। ২১ জুলাইয়ের দলনেত্রীর মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল সভা ঘিরে এমনই ছবি দেখা গেল মালদহ তৃণমূলের অন্দরমহলে।
অভিযোগ, লকডাউনের নিয়ম উপেক্ষা করেই ২১-এর কর্মসূচি পালন করেন জেলার তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের একাংশ। যদিও নিয়ম মেনেই জেলার বুথে বুথে ওই কর্মসূচি পালন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মালদহে। মালদহের দুই শহর ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহে সংক্রমণ ছাড়িয়েছে চার শতাধিক। সংক্রমণ রুখতে দুই শহরে বুধবার পর্যন্ত চলবে লকডাউন। এরই মধ্যে এ দিন জেলার গ্রামের পাশাপাশি দুই শহরে জমায়েত করে ২১-এর কর্মসূচি পালন করার অভিযোগ উঠেছে।
একই সঙ্গে উঠে এসেছে দলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ ছবিও। দলীয় সূত্রে খবর, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ব্যক্তিগত কার্যালয় সংলগ্ন শহিদবেদীতে কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দাসকে সঙ্গে নিয়ে ২১-এর কর্মসূচি পালন করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। রাস্তার একাংশ আটকে কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তা ঘিরে উধাও হয় সামাজিক দূরত্বও।
এ দিনের কর্মসূচিতেও নাম না করে ইংরেজবাজার পুরসভার প্রশাসক তথা বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ, মালদহ জেলা পরিষদের এক নেতাকে কটাক্ষ করেন তিনি। কৃষ্ণেন্দু বলেন, “শহর অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকলেও হেলদোল নেই। বাড়ির মহিলারা প্রতিবাদ করলে তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে।” একই সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ তুলে নাম না করে জলা পরিষদের এক নেতারও সমালোচনা করেন কৃষ্ণেন্দু।
শহরের বিএস রোড এলাকায় ব্যক্তিগত ভাবে ২১-এর কর্মসূচি পালন করেন নীহাররঞ্জন। বাড়ির সামনে মাইক বাজিয়ে সবুজ কার্পেট পেতে জমায়েত করে কর্মসূচি পালন করেন তিনি। কৃষ্ণেন্দুর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শহরে কাজ হচ্ছে কিনা তা শহরবাসী জানেন।”
শহরের রথবাড়ি এলাকায় নুর ম্যানশনে জেলা কার্যালয়ে বড়পর্দায় তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্য শোনা হয়। সেই কর্মসূচিতে জেলার একাধিক নেতা-নেত্রী হাজির ছিলেন।
শুধু শহর নয়, জেলা জুড়ে জমায়েত করে কর্মসূচি পালিত হয় তৃণমূলের। মৌসম নূর বলেন, “জেলার প্রতিটি বুথেই কর্মসূচি পালন হয়েছে। সর্বত্রই সামাজিক দূরত্ব মেনেই তা করা হয়েছে। আর গোষ্ঠী দ্বন্দ্বেরও কোন বিষয় নেই।”
জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “ভার্চুয়াল সভা আমাদেরই প্রথম হয়েছিল। রাস্তায় নেমে আমাদের সেই সভা করতে হয়নি। তৃণমূল লকডাউন ভেঙে জেলায় সভা-জমায়েত করে কর্মসূচি পালন করেছে।”