ঢিল ছুড়লেই ‘কেল্লা ফতে’। সীমান্তে এমনটাই চালু ধারণা। কানাঘুষো শোনা যায় গরু, কাপড় পাচারে অনেক ঝুঁকি। নানাদিক ‘ম্যানেজ’ করে তবেই ‘ফসল’ ঘরে তুলতে হয়। সেখানে রুপো পাচার তেমন কোনও ব্যাপারই নয়। শুধু ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হয়। বিএসএফ জওয়ানরা একটু ‘এদিক-ওদিক’ হলেই প্যাকেটে মোড়া রুপোর প্যাকেটের ঢিল উড়ে যায় কাঁটাতারের বেড়ার ও পারে। কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে এ ভাবেই ঢুকছে রুপো।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রুপো উদ্ধার করেছে বিএসএফ। বিএসএফের কোচবিহার রেঞ্জের ডিআইজি রাজেশ শর্মা বলেন, “ওই বিষয়ে খোঁজখবর নেব।” বিএসএফের এক কর্তা বলেন, “গত বছরের শেষের দিকেও কিছু রুপো উদ্ধার করা হয়েছিল। এর পরেই রুপোর খোঁজে কড়া নজরদারি চলছে।”
বিএসএফ সূত্রের খবর, বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে কোচবিহারে সোনা পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সোনা আটকও করেছে বিএসএফ। রুপো পাচারের অভিযোগ সাম্প্রতিক। গত বছরের নভেম্বর মাসে রুপো পাচারের অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আসে। বিএসএফ কাগজের প্যাকেটে মোড়া প্রায় ২০ কেজি রুপো আটক করে। ব্যবসায়ীদের একটি সূত্রের খবর, বাংলাদেশ থেকে যে রুপো এ পারে আসছে তা দামে অনেকটাই কম। ভরি প্রতি প্রায় পাঁচশ টাকার হেরফের। দু’ থেকে তিন কেজির একটি করে প্যাকেট তৈরি করে তা এ পারে পাঠানো হয়।
সীমান্তের বাসিন্দাদের কাছে জানা গিয়েছে, চৌধুরিহাট, গীতালদহ, নয়ারহাট থেকে শুরু করে সিতাই, শীতলখুচি, মেখলিগঞ্জের কিছু অংশে দু’পারেই চোরাকারবারীরা সক্রিয়। রুপো পাচারের ক্ষেত্রে তারা প্যাকেট ছুঁড়ে দেওয়াকেই অস্ত্র করেছে। সে ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেকটা কম বলে মনে করে কারবারীরা। ওই পাশ থেকে একজন রুপোর প্যাকেট ছুঁড়ে দেয়। এ পাশ থেকে আরেকজন তা লুফে নিয়ে গা ঢাকা দেয়। একই কায়দায় সোনা পাচার করা হয় বলেও অভিযোগ।
সীমান্ত এলাকা দিয়ে গরু পাচারের অভিযোগ নিত্যদিনের। দিনহাটা সহ নানা সীমান্ত দিয়ে দিয়ে চলে পাচার। বিএসএফের নজরদারি এড়ানোর জন্য কাঁটাতারের বেড়া নেই এমন পথ অথবা নদীপথ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু রুপো পাচারের ক্ষেত্রে কাঁটাতার রয়েছে এমন সীমান্ত দিয়েও অবাধে চলছে কারবার। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “এমন অভিযোগ আমাদের কানেও এসেছে।’’