মানুষ-হাতি সংঘাত চিরকালীন।
জঙ্গল লাগোয়া অঞ্চলে হাতির হামলা ঠেকাতে এ বার অত্যাধুনিক বেড়ার তৈরি করল শিলিগুড়ির স্ন্যাপ ফাউন্ডেশন। নাম ‘ইন্নো ওয়াইল্ড ফেন্স’। প্রস্তুতকারক সংস্থার দাবি, এই বেড়া সহজে ভাঙতে বা মচকাতে পারবে না হাতি।
মানুষ-হাতি সংঘাত চিরকালীন। তা একেবারে বন্ধ করা হয়তো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু তা কমিয়ে আনা যেতে পারে। সংঘাত রুখতে বন দফতর-সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একাধিক চেষ্টা চালিয়েছে। টহলদারি যেমন রয়েছে, ঠিক তেমন ভাবেই জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র বা ফেন্সিং ব্যবহার করে সংঘাত আটকার চেষ্টা চলে। কিন্তু কিছু দিন যেতে না যেতেই সেই ফেন্সিং বা সেন্সর নষ্ট করে দেয় হাতি। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎবাহী ফেন্স নষ্ট করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে হাতিরও মৃত্যু হয়। এই সব বিষয় মাথায় রেখেই এ বার নতুন ধরনের ফেন্স তৈরি করা হয়েছে বলে জানাল শিলিগুড়ির ওই সংস্থা।
প্রস্তুতকারক সংস্থার জানিয়েছে, এই ফেন্সে হাতিরও কোনও ক্ষতি হবে না। ২০২০ সালের শেষের দিকে জলদাপাড়া ওয়াইল্ড লাইভ ডিভিশনের তৎকালীন ডিএফও কুমার বিমলের তত্বাবধানে এই ফেন্স ব্যবহার করা হয় জলদাপাড়ার জঙ্গল লাগোয়া জনবসতির প্রায় ৮০০ মিটার এলাকা জুড়ে। বন দফতরের দাবি, এতে মানুষ-হাতি সংঘাতও কমে এসেছে আগের তুলনায়।
এই বেড়ার বিশেষত্ব হল, এতে লাইট এবং সেন্সর লাগানো থাকে। তারে টান লাগলেই ওই লাইট জ্বলে ওঠে এবং আশপাশে থাকা বন দফতরের গাড়িতে বেজে ওঠে সাইরেন। সাধারণত বিদ্যুৎবাহী ফেন্সে টান পড়লে যে শব্দ শোনা যায়, তা সেই শব্দ হাতির চেনা। ওই শব্দ শুনলে সাধারণত বেড়া থেকে দূরে সরে যায় হাতি। এই প্রবণতা নজরে রেখেই বেড়ার তারের সঙ্গে লাগানো রয়েছে মোটর। এর ফলে এই বেড়ার তারে টান পড়লেই বিদ্যুতবাহী তারের মতো শব্দ বেরোয়।
সংস্থার চেয়ারম্যান কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই বেড়া খুব কম খরচে তৈরি করা যায়। বেড়ার দাম মেরেকেটে ১২০০-১৩০০ টাকা। একটি বেড়া দু’তিন বছর টিকে যাবে।’’
বিমল বলছেন, ‘‘হাতি নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। যার ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই মানুষের সঙ্গে সংঘাত বাঁধে। জঙ্গল যে ভাবে ছোট আসছে তাতে আমরা চাই, হাতিও ভাল থাকুক এবং মানুষেরও যেন কোনও ক্ষতি না হয়। হাতির হানা রুখতে এই বেড়া খুবই কাজে লাগতে পারে।’’