মন্ত্রী-বার্তা: বুধবার জলপাইগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে মাস্কবিহীন নিশীথ প্রামাণিক ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র
এত ভিড় কেন? কার্যত এই প্রশ্নে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গী হতে চাওয়া বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকে দিল শিলিগুড়ি পুলিশ। তাই নিয়ে যাবতীয় কর্মসূচি পিছিয়ে দিয়ে দিনভর শিলিগুড়ির তারাখচিত হোটেলে বসে রইলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বাতিল করে দিলেন শিলিগুড়ির শহিদ সম্মান কর্মসূচি। শেষে সারা দিন বিজেপি ও পুলিশের মধ্যে দড়ি টানাটানির পর বিকেল চারটের সময়ে তিনি বার হয়ে নৌকাঘাটে যান। সেখানে কর্মসূচি শেষ হলে জলপাইগুড়ি হয়ে হলদিবাড়ি চলে যান।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, বুধবার সকাল থেকে শহরের স্টেশন ফিডার রোডের একটি স্কুল ও বর্ধমান রোডের একটি ভবনে পুলিশ আটকে রাখে শতাধিক নারায়ণী সেনা ও তাদের গাড়িগুলি। অভিযোগ, করোনা বিধি ভেঙে জমায়েত ও বিনা অনুমতিতে মিছিলের চেষ্টা। মন্ত্রীর হোটলের সামনে রাস্তায় ট্র্যাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে ৬টি গাড়ির চাকা আটকে দেওয়া হয়। বিজেপি সূত্রে দাবি, এই ঘটনায় ক্ষোভে হোটেলেই বসে থাকেন মন্ত্রী। পরে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মার সঙ্গে নিশীথ ও দলের নেতা-বিধায়কদের আলোচনা হয়। সেখানে পুলিশের তরফে জানানো হয়, অনুমতি নেই বলে শহিদ সম্মান যাত্রা করা যাবে না। গাড়িগুলিকে দ্রুত শহর ছেড়ে যাওয়ার শর্তে ছাড়া হয়।
টানাপড়েন এখানেই শেষ নয়। বিকেল চারটে নাগাদ মন্ত্রী মাল্লাগুড়ির হোটেল থেকে বার হয়ে নৌকাঘাট মোড়ে পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করে ফুলবাড়ি, বেলাকোবা হয়ে জলপাইগুড়ির দিকে রওনা হন। পুলিশ সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ৩৬টি গাড়িতে ৩২০ জন রওনা হয়ে নৌকাঘাটে মন্ত্রীর পিছন পিছন জড়ো হতে থাকে। সেই সময়ে পুলিশ আবার কড়া অবস্থান নিতে পারে মনে করে নিশীথের গাড়িকে নিরাপত্তা দিয়ে আলাদা বার করে দেওয়া হয়। বাকি গাড়িগুলিও অন্য দিকে চলে যাওয়া শুরু করে।
শিলিগুড়ির ডিসি (পূর্ব) জয় টুডু বলেন, “করোনার মধ্যে জমায়েত, মিছিলের অনুমতি নেই। এখানে কারা এসেছে আমাদের জানা নেই। তাই স্কুল ও ভবনের বাইরে পুলিশ ছিল।’’
পরে নিশীথ জলপাইগুড়িতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘কোনও জমায়েত হয়নি। কোভিড বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব নিয়ম অনুসরণ করে কিছু মানুষ এসেছিলেন। সব সরকারি নির্দেশ মেনেই কর্মসূচি হয়েছে।’’ বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি দীপেন প্রামাণিক দাবি করেন, তৃণমূল নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁদের হেয় করতেই এই কাজ করেছে পুলিশ।
মাটিগাড়ার তৃণমূল নেতা খগেশ্বর রায় পাল্টা বলেন, ‘‘যাঁরা নারায়ণী সেনার পরিচয়ে শিলিগুড়ি এসেছিলেন, তাঁরা সবাই বিজেপির তাঁবেদার।’’
দিল্লিতে সংসদ অধিবেশন শেষ হতে দুই ভূমিপুত্র সাংসদ, আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা এবং কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক রীতিমতো সফরসূচি ঘোষণা করে রাজ্যে ফেরেন। মঙ্গলবারই দু’জন শিলিগুড়িতে আসেন। তার আগেই কোচবিহার-সহ বিভিন্ন এলাকায় থেকে নারায়ণী সেনা এবং গ্রেটারের সদস্যরা শিলিগুড়িতে জড়ো হওয়া শুরু করেন। প্রথম দফায় ৬২ জনকে গ্রেফতার করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাজু বিস্তাকে নিয়ে পাহাড়ে চলে যান জন বার্লা।