কসরৎ: চলছে ব্যায়াম শিবির। নিজস্ব চিত্র
কখনও থানায় কাজ, কখনও ট্রাফিক শাখায় কাজ। আবার কখনও ভিআইপি ডিউটি। রাতদিন টানা কাজের কারণে বেশিরভাগ সময়েই পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। উৎসবের সময় পরপর টানা কাজ করে যেতে হয় তাঁদের। কম ছুটি, অনিয়মিত খাওয়া আর ঘুমের সমস্যায় জেরবার হওয়ায় পুলিশ কর্মীরা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কাবু হয়ে পড়েন বিভিন্ন রোগে। তার মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে মাত্রাতিরিক্ত শর্করা, কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিডের মতো সমস্যা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন প্রতিদিন কসরৎ এখন অনেক পুলিশকর্মীদের পক্ষেই করা সম্ভব হয় না। তাই তাঁদের প্রয়োজন ‘স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট’। দিনের মধ্যে কিছু সময় বার করে হাঁটা বা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখা যেতে পারে। সেই কারণেই পুলিশকর্মীদের জন্য যোগব্যায়াম ও ধ্যানের ক্লাস শুরু করল শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকের অধীনে গত শনিবার থেকে কমিশনারেটের মাঠে শুরু হয়েছে ক্লাস। বিভিন্ন থানা, ইউনিট, শাখা ধরে সপ্তাহে শনিবার সময় বার করে যোগব্যায়ামের ক্লাস হবে। কমিশনারেট চালুর পরে এক দফায় এরকম ক্লাস চালু হলেও তা অনিয়মিত ছিল বলে পুলিশকর্মীদের একাংশের দাবি। এ বার লিশ কর্মীদের শরীরের কসরৎ করানোর জন্য নতুন করে শুরু হয়েছে সেই ক্লাস। গত শনিবার পুরুষ এবং মহিলা অফিসার, কনস্টেবল মিলিয়ে ৪৪জন শিবিরে অংশ নেন।
পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর) অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘কর্মসূচিটি আমাদের কাজের অঙ্গ হিসাবে রাখা হয়েছে। পুলিশকর্মীদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখাটাও আমাদের দায়িত্ব। তাই পুলিশ কর্মীদের জন্য স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের ক্লাস করানো হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি শহরের পরিচিত যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন। তাঁর সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন জাতীয় স্তরে অংশগ্রহণকারী শিবনাথ পাল। এই দু’জনের সঙ্গে রয়েছেন তরুণ যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক ভোলা সিংহ। প্রদীপ এর আগেও শিলিগুড়ি পুলিশকে নিয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি শহরের একটি জায়গায় বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ দেন। তাছাড়াও বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি সংস্থার পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেন। সূত্রের খবর, পুলিশ কর্মীদের জন্য শরীরের বিশেষ কিছু ‘স্ট্রেচিং’-র সঙ্গে পেট, ফুসফুস, হৃদয় ভাল রাখতে ধ্যান ও যোগব্যায়াম করানো হচ্ছে।
প্রদীপ জানান, আজকালকার ব্যস্ত জীবনের রুটিনে ৪০ বছরের কাছাকাছি আসতেই পুরুষ বা মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কারও রক্তে বেশি শর্করা, কারও উচ্চ রক্তচাপ, টক্সিন বৃদ্ধি বা কোমর, ঘাড় বা হাঁটু বা হাতে ব্যথায় কাবু হয়ে পড়ছেন। তাঁর মতে, অনিয়মিত জীবনযাপন, খাদ্যাভাস থেকেই এমন হচ্ছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘সপ্তাহে একদিন ক্লাস করার পরে একটু সময় বার করে তা নিয়মিত অভ্যাস করলে যে কেউ নীরোগ এবং সুস্থ থাকতে পারবেন।’’