গৌতম দেব।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় দেদার সরকারি জমি দখল নিয়ে মুখ খুললেন এলাকার প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব। তাঁর দাবি, এলাকায় অনেক সরকারি জমি দখল হয়েছে। তিনি মন্ত্রী থাকার সময় অনেক জমি দখলমুক্ত করেছিলেন। সেখানে নানা সরকারি প্রকল্প গড়েছেন। আবার সব জমি দখলমুক্ত করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরে অবৈধ জমির কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রথমে দলের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রমাণিক, পরে সহ-সভাপতি গৌতম গোস্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’জনকেই বহিষ্কার করে তৃণমূল। হইচই পড়ে। বিরোধীদের অভিযোগ, জমির কারবারে শাসক দলের অনেকেই যুক্ত। পুলিশ সম্প্রতি বিজেপির জলপাইগুড়ি কিসান মোর্চার নেতা উত্তম রায়কেও গ্রেফতার করে। তিনি জামিনে ছাড়া পান।
মেয়র শুক্রবার দাবি করেন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী থাকাকালীন অনেক জায়গা তিনি উদ্ধার করেছেন। তবে সব জায়গা উদ্ধার করা য়ায়নি। মেয়র বলেন, ‘‘ফুলবাড়িতে প্রচুর সরকারি জায়গা উদ্ধার করে সীমানা পাঁচিল দিয়ে ঘিরেছি, তিন জন মন্ত্রীর সাহায্য নিয়ে। শোভন চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং অরূপ বিশ্বাস। তাঁদের চিঠি দিয়েছিলাম।’’ ফুলবাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর মিনি সচিবালয় ‘উত্তরকন্যা’ যেখানে তৈরি হয়েছে সেই জায়গা আবাসন দফতরের ছিল। সেই জমি দখল হয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। মেয়র বলেন, ‘‘অনেক জায়গা বেআইনি ভাবে দখলও হয়েছে। সেগুলো অনেক চিঠিও দেওয়া রয়েছে। পরিমাণ এখন বলতে পারছি না। সবগুলো উদ্ধার করা সম্ভব ছিল না। যতগুলো পেরেছি, করেছি।’’
মেয়র আরও জানান, মন্ত্রী থাকার সময় তিনি সরকারি জমিগুলো উদ্ধার করে হাতিঘিসায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি ভবন তৈরি করেন। অটল চা বাগানে জায়গা উদ্ধার করে বিরসা মুন্ডা কলেজ হয়েছে, বাতাসিতে জমি উদ্ধার করে আইটিআই হয়েছে, ঘোষপুকুরে সরকারি জায়গায় উদ্ধার করে কলেজ করা হয়েছে। লালপাহাড়ি বলে ফাঁসিদেওয়ার একটি জায়গায় আইটিআই হয়েছে। বেঙ্গল সাফারি পার্ক যেখানে, সে জায়গাও দখল হয়ে যাচ্ছিল বলে দাবি মেয়রের। ডাবগ্রামে ঢাকেশ্বরী কালীবাড়ির পাশের জায়গা দখলমুক্ত করেছেন বলে দাবি মেয়রের।
গৌতম দেবের আরও দাবি, সাহুডাঙি শ্মশান সরকারি জায়গা উদ্ধার করে হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা দখল করে নিচ্ছিল ২.৯৯ একর জায়গা। তা উদ্ধার করা হয়েছে সূর্য সেন কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়তে। শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকাতেও অনেক জায়গা উদ্ধার হয়েছে। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে জবরদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে একাংশে স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়েছে। মিলনপল্লিতে সরকারি জমি থেকে দখল সরানো হচ্ছে।