কলকাতা থেকে ফিরে শিলিগুড়ির ভেনাস মোড়ের পূর্ত দপ্তরের বাংলোতে কাউন্সিলারদের নিয়ে মিটিং করছেন মেয়র গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পরে শিলিগুড়ি পুরসভার অন্দরে মেয়র পারিষদের একাংশের কাজ ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে পড়ল। মঙ্গলবার কলকাতা থেকে ফিরে দলীয় পুরপ্রতিনিধি তথা মেয়র পারিষদ, বরো চেয়ারম্যানদের নিয়ে পূর্ত দফতরের ইনস্পেকশন বাংলোয় বৈঠক করেন মেয়র গৌতম দেব। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার সুরেই এ দিন তিনি সবাইকে জনসংযোগ রেখে কাজ করার কথা বলেন এবং রাস্তা, ফুটপাথ, নিকাশির জায়গা দখল করে দোকান গজিয়ে ওঠা, অবৈধ নির্মাণ এ সব কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দেন।
সোমবার কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে জানান, পানীয় জল পরিষেবা নিয়ে যে পুরসভাগুলোর সব চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তার মধ্যে রয়েছে শিলিগুড়ি। এই পুরসভার পানীয় জল বিভাগ, স্বাস্থ্য, বস্তি উন্নয়ন, ট্রেড লাইসেন্স, পার্কিং, বিল্ডিং বিভাগের মতো বিভিন্ন বিভাগের কাজ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সে কারণে মেয়র পারিষদের কাউকে দায়িত্ব থেকে সরানো হচ্ছে কি না, তা নিয়েও দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। মেয়র অবশ্য বলেন, ‘‘এ সব বিষয় আমি দেখি না। সে সব নিয়ে কিছু বলারও নেই।’’
এ দিন বৈঠক প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যা নির্দেশ দিয়েছেন, পরিষেবার সমস্ত দিকগুলো দ্রুত কার্যকর এবং গতিশীল করা হবে। বরোগুলোকে সক্রিয় করা হচ্ছে। সরকারি জমি কোথাও, কেউ দখল করলে মানা হবে না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যেমন অধিকারপল্লিতে। দিদির দেওয়া নাম। সেখানে বড় বিল্ডিং করে এখন বস্তির মানুষকেই উচ্ছেদ করে তাঁদের গলা কেটে মারার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। মুখ্যমন্ত্রী বলার পরে, পুলিশ-প্রশাসন নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে। পুর এলাকা সংলগ্ন জায়গায় সরকারি জমি এ ভাবে যারাই দখল করছে, যে চক্র করছে পুলিশ নিশ্চিত ভাবে ব্যবস্থা নেবে। আমরা নজরদারি করব। প্রচুর দখল হচ্ছে। ৪০ বছর ধরে অভ্যাস তৈরি করা হয়েছে। যে ভাবেই হোক শহর সচল প্রাণবন্ত গতিশীল রাখতে হবে।’’ রিপোর্ট কার্ডে শিলিগুড়ি কোনওটাতেই সেরা পাঁচে নেই। সেটা ভাবাচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষকে।
মুখ্যমন্ত্রীর চেষ্টাতেই নতুন জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মেয়র। তবে বর্ষায় তিস্তার জল ঘোলা হয়। পলি, অনেক কিছু ভাসিয়ে আনে। তাই পুকুর থাকলে জল মজুত করে সরবরাহ করার সুবিধা হত। তা এই প্রকল্পে করা হচ্ছে। আগামী শুক্রবার পানীয় জল এবং ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির জেলাশাসকেরা থাকবেন। শহরে পরিষ্কার রাখা এবং ব্যয় সংকোচের জন্য বলা হয়েছে। বিদ্যুতের খরচ কমাতে বলা হয়েছে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন অবশ্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলার পরও কাজ হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে।’’