দাবি: মেয়রকে আটকে রেখে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
পুরভোটের সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ হতেই শিলিগুড়িতে বাম বোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল তৃণমূল। বার্ধক্য ভাতার দাবিতে সোমবার প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘেরাও করে রাখা হয় শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে। অসুস্থ হয়ে মেয়র প্রথমে মন্ত্রী গৌতম দেবকে ফোন করার চেষ্টা করেন। পরে ফোন করেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্বকেও। যদিও আলোচনার আশ্বাস দিলে তাঁকে ছেড়ে দেয় তৃণমূল। এই ঘটনার কথা তিনি রাজ্য বিধানসভায় উত্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন।
এ দিন তৃণমূলের জোড়া আন্দোলনের নাস্তানাবুদ হয়ে অসুস্থ হলেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। এ দিন প্রথমে ৪০ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কমিটির তরফে মেয়রকে স্মারকলিপি দেওয়া হয় বার্ধক্য ভাতা নিয়ে। দুপুরে একই দাবিতে ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রায় শ’তিনেক বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের টোটো চাপিয়ে পুরসভায় নিয়ে আসে তৃণমূল। তাঁরা পুরভবনের দোতলায় ত্রিপল পেতে বসে পড়েন। মেয়র, পুর কমিশনার এবং পুর সচিব এবং বিত্ত আধিকারিকের ঘর পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তাতে। দুপুর থেকে টানা সাড়ে চারটে পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এ দিন পুরসভায় প্রথম অর্ধে কয়েকটি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। দুপুর একটা থেকে টানা ঘেরাও শুরু হয়। তার ফলে মেয়র সময়ে স্নান-খাওয়া কিছুই করতে পারেননি বলে তাঁর দাবি। ঘণ্টা দুই এ ভাবে চলার পর মেয়রের সাহায্যে নামেন মেয়র পারিষদ শরদিন্দু চক্রবর্তী। তিনি বিস্কুটের প্যাকেট নিয়ে মেয়রের ঘরের দিকে এগিয়ে যেতেই তাঁকেও আটকে দেয় তৃণমূল সমর্থকরা। ইনসুলিন ইনঞ্জেকশন সময়ে না নেওয়ার জন্য ব্লাড সুগার বেড়ে গিয়ে অসুস্থও হয়ে পড়েন মেয়র। পরে শরদিন্দুই বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারকে ফোন করেন। তারপর আলোচনার আশ্বাসে বিকেল সাড়ে চারটেয় তাঁকে ছাড়া হয়। মেয়র বলেন, ‘‘ওদের দাবি কী বলছে না, আলোচনা চাইছে না। কেবল এক কাউন্সিলররের জয় গান করছে। আন্দোলনের নামে এসব অভভ্যতার জন্য প্রথমে গৌতম দেবকে ফোন করার চেষ্টা করি। পরে পুলিশ কমিশনারকে।’’ পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্বকে ফোন করে অভিযোগ করেন, এতক্ষণ আটকে থাকার পরেও পুলিশ তাঁকে উদ্ধারে এল না কেন? মেয়র ঘেরাও-য়ের বিরুদ্ধে আজ, মঙ্গলবার ধিক্কার মিছিলের ডাক দিয়েছে বাম নেতৃত্ব।
বিরোধীদের অভিযোগ, শহরের প্রচুর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করেও ভাতা পাচ্ছেন না। যাঁরা পাচ্ছেন, তাদেরও অনেক দিনের বকেয়া। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধকতাযুক্ত মানুষের ভাতার ভার রাজ্য নিয়েছে। তারপরেও কেন টাকা থাকবে না? সব টাকা দলীয় ক্যাডার পোষায় খরচা করছেন মেয়র।’’ শহরে প্রায় ২২৪৩ জন মাসে ৫০০ টাকা করে ওই ভাতা পান। কিন্তু অভিযোগ, গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে বেশ কয়েকজনের ভাতা বন্ধ রয়েছে। পুরসভা সূত্রে দাবি, প্রশাসক থাকাকালীন প্রায় এক বছর ভাতা পাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। পরে সেগুলি এক মাসের বদলে দু’মাস করে দিয়ে শোধ করা হচ্ছে। নতুন কিছু প্রাপককেও প্রকল্পে যুক্ত করা হবে।