প্রতীকী চিত্র।
শিলিগুড়ি শহর থেকে জলপাইগুড়ির দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। আর ইসলামপুর প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে। শিলিগুড়ি থেকে এই দু’টি জায়গার মাঝামাঝি এলাকায় কোনও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে কোনও একটি দিকের দমকল কেন্দ্র থেকে ইঞ্জিন পাঠাতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যাচ্ছে। দূরত্বের কারণে দ্রুত বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না বলে দাবি দমকল কর্তাদের একাংশ। এই কারণেই শিলিগুড়ি ও ইসলামপুরের মাঝে বিধাননগর এবং জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির মাঝে রাজগঞ্জে দু’টি দমকল কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে শিলিগুড়ি ডিভিশন। গত মাসেই ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্য দফতরে। তবে রাজ্য দফতর থেকে এখনও কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
গত কয়েক বছর ধরে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকাগুলোয়। যানজট বা রাস্তার সমস্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছতে দেরি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন দমকল কর্তারা। শিলিগুড়ি দমকল ডিভিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজগঞ্জে তেলের ট্যাঙ্কারে আগুন লেগেছিল। সেদিকে রওনা দিয়ে বিপদে পড়েছিলাম আমরা। রাস্তায় এতটাই যানজট ছিল যে সময়ে পৌঁছনো যায়নি। ঘোষপুকুর বা বিধাননগরের ক্ষেত্রেও একইরকমের সমস্যা হচ্ছে।’’ দমকল কর্মীদের দাবি, গত কয়েক বছরে শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় লোকসংখ্যা যেমন বেড়েছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেড়েছে দুর্ঘটনা ও আগুন লাগার ঘটনাও। কিন্তু শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া, জলপাইগুড়ি ও ইসলামপুর এই চারটি ছাড়া মাঝখানে কোথাও দমকলকেন্দ্র নেই। ফলে মাঝামাঝি এলাকায় কোনও ঘটনা ঘটলে ২৫-৩৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। দমকলের কর্মীদের দাবি, এমনিতেই সময় পৌঁছলেও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ দমকলের দেরিতে আসার অভিযোগ তোলেন। সেখানে এত দূরের পথ পেরিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে এমনিতেই দেরি হচ্ছে, তাই জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ দমকলকর্মীদের। সবদিক বিবেচনা করেই রাজ্য দফতরকে দ্রুত ওই দু’টি এলাকায় নতুন কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন জানানো হয়েছে।
আগুন-কাণ্ড
ডিসেম্বর ২০১৯: ঘোষপুকুরে চটকলে আগুন, শিলিগুড়ি ও মাটিগাড়া থেকে ১২টি ইঞ্জিন অক্টোবর ২০১৯: রাজগঞ্জে তেলের ট্যাঙ্কারে আগুন, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি থেকে ইঞ্জিন ফেব্রুয়ারি ২০১৯: বিধাননগরে ট্যাঙ্কারে আগুন, শিলিগুড়ি ও মাটিগাড়া থেকে ইঞ্জিন ফেব্রুয়ারি ২০১৯: বিধাননগরে পঞ্চায়েত দফতরে আগুন, মাটিগাড়া থেকে একটি ইঞ্জিন অগস্ট ২০১৮: ফুলবাড়িতে দুটি ট্রেলারের সংঘর্ষ, শিলিগুড়ি থেকে ইঞ্জিন
উত্তরবঙ্গের গোয়ালপোখরে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে একটি দমকলকেন্দ্র। দমকল সূত্রে দাবি, লোকবল, ইঞ্জিন ও অগ্নি-নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং পরিকাঠামো ছাড়া উত্তরবঙ্গের নতুন দমকলকেন্দ্রগুলিতে কাজ বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। কেন্দ্র স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে আলাদা ইঞ্জিন এবং লোকবলও প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন কর্মীরা।