বেড়া দিল কে, বিতর্ক সূর্যসেনে

আবর্জনা ফেলার বিরোধিতা করা হলেও সরকারি রাস্তার পাশের জমি কেউ ঘিরে দিতে পারেন কি না, সেই এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৪:২৯
Share:

সূর্য সেন পার্কের অভ্যন্তরে। —ফাইল চিত্র

বাম আমল থেকেই মহানন্দা নদীর চর দখলের অভিযোগ রয়েছে। সেই দায় কার, তাই নিয়ে শহরের মেয়র ও মন্ত্রীর মধ্যে নতুন করে তরজা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে মহানন্দা নদীর চরের পাশে, শহরের সূর্যসেন পার্কের একটি গেটের সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে রাতারাতি সরকারি জমি ঘিরে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, ‘‘এলাকার আবর্জনা পার্কের সামনে জড়ো করা হত। তাতে এলাকার পরিচ্ছন্নতা নষ্ট হচ্ছিল। তা রুখতে কিছু লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তার পাশের জমি ঘেরা হয়েছে।’’ আবার আর এক দলের অনুমান, এখন আবর্জনার কথা বলা হলেও পরে দখল করে দোকান তৈরি হতে পারে।

Advertisement

আবর্জনা ফেলার বিরোধিতা করা হলেও সরকারি রাস্তার পাশের জমি কেউ ঘিরে দিতে পারেন কি না, সেই এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার প্রবীণ নাগরিকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, পুরসভার বিরোধিতা করার অনেক পন্থা আছে। আবর্জনা ফেলা ঠেকাতে কাউন্সিলরের অফিস ঘেরাও করা যেত। পুরসভার গাড়ি আটকানো যেত। কিংবা এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে পারতেন। সে সব না করে জমিটি ঘেরা দেওয়াতেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ, ওই ঘেরার অংশের আগে পরপর দোকান বসতে শুরু করেছে। পার্কের সামনে অংশে ভবিষ্যতে খাবারের দোকান যে তৈরি যে হবে না, তা কেউ বলতে পারেন না।

এই অবস্থায় স্থানীয় পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। দলের এলাকার নেতা মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘এ তো সরকারি জমি দখলের শামিল। যাঁরাই এক কাজ করুন না কেন, পুরো বেআইনি কাজ করেছেন। নানা অভিযোগ, বক্তব্য থাকতে পারে। তা বলে সরকারি জমি দখল মানা যায় না। এলাকার কাউন্সিলর কী করছেন, বুঝতে পারছি না।’’

Advertisement

পুরসভার তরফেও ঘটনা নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। পুরসভার পূর্ত দফতরের কয়েক জন অফিসার জানান, ওই এলাকায় একটি হাইস্কুল রয়েছে। তার সামনে পাকা রাস্তা। অন্য পাশেই সূর্যসেন পার্কের সীমানা পাঁচিল। রাস্তা এবং সীমানা পাঁচিলের মাঝের কিছুটা অংশ বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা হয়েছে। এতে জমি দখলের পাশাপাশি রাস্তার ওই অংশও সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। নিছকই আবর্জনা ফেলা ঠেকাতে এই ব্যবস্থা, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা রাতারাতি ওই কাজ করেছে, তা-ও চিহ্নিত করা হচ্ছে। জড়িতদের একজন এলাকার বাসিন্দাই নন বলেও জানা গিয়েছে।

এলাকার কাউন্সিলর কমল অগ্রবাল অবশ্য বিষয়টি বিশেষ কি‌ছু বলতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘আবর্জনা ফেলার কথা বলে এলাকা ঘেরা হয়েছে। এতে পুরসভার গাড়ি অন্যত্র দাঁড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে। তা ঠিক কী জন্য কী হচ্ছে, তা আমরাও দেখছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement