ডাল লেক। —ফাইল চিত্র।
গতকাল রাতে শ্রীনগরের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল মাইনাস ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রেকর্ড বলছে, গত ৫০ বছরে এত ঠান্ডা পড়েনি ভূস্বর্গের গ্রীষ্মকালীন রাজধানীতে। এর আগে ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে শীতলতম রাতে তাপমাত্রা নেমেছিল মাইনাস ১০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
অন্য দিকে, শুক্রবারের রাতটা ছিল শ্রীনগরের তৃতীয় শীতলতম রাত। ১৮৯১ সাল থেকে শ্রীনগরে দৈনন্দিন তাপমাত্রা মাপা শুরু হয়েছে। সেই থেকে এ যাবৎ সবচেয়ে ঠান্ডা পড়েছিল ১৯৩৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর। সে বার তাপমাত্রা নেমেছিল মাইনাস ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
শ্রীনগরের পাশাপাশি গতকাল রাতে জম্মু-কাশ্মীরের অন্য অনেক জায়গায় জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছিল। তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে। অনন্তনাগের তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ১০.৫ ডিগ্রি, সোপিয়ানে মাইনাস ১০.৪ ডিগ্রি, পুলওয়ামায় ছিল মাইনাস ১০.৩ ডিগ্রি।
শনিবার থেকে উপত্যকায় চিলাই-কালানের সূচনা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রবল শীতের প্রথম ৪০ দিনকে চিলাই-কালান বলা হয়। এর পরের ২০ দিন চিলাই-খুর্দ ও তারও পরের ১০ দিন (২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ) অল্প ঠান্ডার সময়কে চিলাই-বাচ্চা বলা হয়।
তবে প্রবল ঠান্ডার কারণে সমস্যা বাড়ছে মানুষের। জলের পাইপ জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পর্যাপ্ত না হওয়ায় ঘর গরম রাখতে বহু জায়গায় মাটির উনুন ভরসা। জমে গিয়েছে ডাল লেক-সহ জলাশয়গুলি। ঠান্ডা আর শুকনো হাওয়ায় শ্বাসকষ্ট, সর্দি-কাশিতে ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।
শ্রীনগরের নাতিপোরার বাসিন্দা মহম্মদ সালিম বলছিলেন, ‘‘এত ঠান্ডা আগে কখনও দেখিনি। আমার দেখা শীতলতম শীতকাল এটি। একটানা বিদ্যুৎ নেই। তাই বুখারি (গ্যাসচালিত হিটার) আর কাংরি (মাটির উনুন) জ্বেলে ঘর গরম রাখতে হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা তুষারপাতের জন্য অপেক্ষা করছি। বরফ পড়লে শুষ্ক-শীতল বাতাসের টান খানিকটা কমবে। পরিবেশ কিছুটা সহনশীল হবে।’’ আবহাওয়া দফতর অবশ্য জানিয়েছে, আজ-কালের মধ্যে কাশ্মীরের উঁচু এলাকাগুলিতে হালকা তুষারপাত হতে পারে। ২৭-২৮ ডিসেম্বরের রাতেও বরফ পড়তে পারে বলে তারা জানিয়েছে।