ধসে যাওয়া ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। শ্বেতীঝোরা এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবারের পরে সোমবারও শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ থাকল। বিপজ্জনক ভাবে ধসে যাওয়া সড়ক সারাইয়ের কাজ চললেও রাস্তা খুলতে সময় লাগবে বলে কালিম্পং জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। তবে বৃষ্টি থামায় সংস্কারকাজে গতি এসেছে। আজ, মঙ্গলবার এবং কাল, বুধবার টানা কাজের পরে রাস্তা খোলা নিয়ে পুলিশ–প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। প্রথমে একমুখী এবং তার পরে গোটা রাস্তা ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বুঝে খোলা হবে। এ দিনও ঘুরপথে কালিম্পং ও সিকিম থেকে ছোট এবং পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করেছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় রাস্তাটির নীচের আরও কিছুটা অংশ ধসে গিয়েছে। তাতে পূর্ত দফতরের বাস্তুকারদের চিন্তা বেড়েছে। তা আটকানোর কাজ চলছে। রাস্তাটির একটি অংশের পিচের চাদর উপরে থাকলেও নীচের অংশে গর্ত হয়ে তা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর ফলেই ধসে যাওয়া অংশের আকার বড় হয়ে যাচ্ছে। কালিম্পঙের জেলাশাসক বালসুব্রহ্মণ্যন বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে মেরামতির কাজ চলছে। যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ির সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে আপাতত রাস্তা বন্ধ থাকছে। বুধবারের পরে রাস্তা খোলা যায় কি না, দেখা হবে।’’
এলাকাটি বরাবর ধসপ্রবণ হওয়ায় পূর্ত দফতর এবং প্রশাসন ধারাবাহিক নজর রাখে। এ বারের ভরা বর্ষায় শ্বেতীঝোরার পরিস্থিতি খুব ভাল ছিল না। এই পরিস্থিতিতে সেপ্টেম্বরের শেষে দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তার একাংশ খাদের দিকে বসে গিয়েছে। জাতীয় সড়কটি বন্ধ থাকায় শিলিগুড়ি ও ডুয়ার্স থেকে সিকিমে ঘুরপথে যোগাযোগ চলছে। পণ্যবাহী গাড়ি গরুবাথান-লাভা হয়ে করোনেশন সেতু, সেবকে নেমে শিলিগুড়ি আসছে। যাত্রিবাহী ছোট গাড়ি এই রুট ছাড়াও তিস্তাবাজার হয়ে কার্শিয়াং যাচ্ছে। সেখান থেকে শিলিগুড়ি নামছে। ঘুরপথে যাতায়াতের জন্য সময় ও গাড়ি ভাড়াও বাড়তি লাগছে। তিস্তাবাজার, লাভা, গরুবাথান এলাকায় যানজট এড়াতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত রবিবার রাত থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব উত্তর প্রদেশে সরে গিয়েছে। তার ফলে নতুন করে জলীয় বাষ্প এই এলাকায় ঢুকছে না। তবে বজ্রগর্ভ মেঘসঞ্চার-সহ আগামী কয়েক দিন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘ভারী বৃষ্টি আপাতত হচ্ছে না। বাতাসে জলীয় বাষ্পের সঙ্গে রোদের তাপ মিলে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার ঘটতে পারে কয়েকটি এলাকায়। মঙ্গলবার কয়েকটি জেলায় বজ্রপাতের আশঙ্কাও রয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ জেলাতেই রবিবার রাত বা সোমবার সকালের পরে টানা বৃষ্টি বন্ধ হয়েছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে নতুন করে কোনও ধসের খবর প্রশাসনিক সূত্রে মেলেনি।