ফাইল চিত্র।
মৈত্রী চুক্তি মেনে নেপাল এবং ভারতের মধ্যে অবাধ যাতায়াত চলে বাসিন্দাদের। কে কখন নেপাল থেকে এপারে আসছেন, কখন ভারতের কেউ নেপালে যাচ্ছেন তা বোঝা মুশকিল। এই পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রবিবার থেকেই ভারত-নেপাল সীমান্তে পশুপতি, পানিট্যাঙ্কি, সীমানা এবং ওকাইটি এলাকায় শিবির করে স্বাস্থ্য দফতর নজরদারি চালাচ্ছে। এরপরেও সচেতনতা বাড়াতে এলাকাগুলোয় ব্যাপক মাইকিং করা হচ্ছে। কোনওরকম উপসর্গ দেখে সন্দেহ হলেই হাসপাতালে যোগাযোগ করার কথা বলা হচ্ছে।
কারও রোগ ধরা পড়লে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রবিবারই স্বাস্থ্য দফতরের করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের বিষয়ে দায়িত্বে থাকা আধিকারিক বিকাশ মণ্ডল শিলিগুড়িতে পৌঁছন। জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (২) তুলসি প্রামাণিকের সঙ্গে নেপাল সীমান্তের পশুপতি, পানিট্যাঙ্কি, ওকাইটি এলাকা ঘুরে দেখেন। সোমবার তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। এ দিনই বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক বিকাশ মণ্ডল।
মেডিক্যালে ৬টি শয্যা করোনা ভাইরাসের রোগীদের জন্য আলাদা করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনার উপসর্গ হিসেবে সর্দি, কাশি, জ্বর হয়। সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও থাকে। এই কারণে আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য অন্তত ৫টি আলাদা ভেন্টিলেটর চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধির কাছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এমনিতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর নেই। আইসিইউ বা সিসিইউ’র ভেন্টিলেটর আইসোলেশন ওয়ার্ডে ব্যবহার করা হলে তা আর ফেরৎ আনা যাবে না বলেই চিকিৎসকদের মত। সে জন্যই আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য আলাদা ভেন্টিলেটর প্রয়োজন বলে তারা জানান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য আধিকারিক আইসোলেশন ওয়ার্ডের পরিকাঠামো দেখেছেন। আলাদা ভেন্টিলেটরের জন্য তাঁকে বলা হয়েছে।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ছাড়া ওই এলাকায় অন্য কোনও হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। তাই কোনওরকম উপসর্গ দেখলেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। করোনা সম্পর্কে সচেতন করতে জেলার সমস্ত হাসপাতালের প্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মশালা করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক বিকাশ মণ্ডল। উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ এর দফতরে জেলার ন’টি ব্লকের হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকদের সচেতন করা হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে করোনা ভাইরাস নির্ণয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আরও ভাল পরিকাঠামো থাকায় ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে নমুনা পাঠাতে বলা হয়েছে।
দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘যাঁরা নেপাল থেকে ভারতে ঢুকছেন তাঁদের কেউ চিনে গিয়েছিলেন কি না তা দেখা হচ্ছে।’’ সোমবার পর্যন্ত কোনও সন্দেহভাজন রোগী মেলেনি বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।