নজর: ক্যামেরায় চোখ অশোক বিশ্বনাথনের। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
পর্দায় ফুটে উঠবে শিলিগুড়ির সুভাষপল্লির বাড়ির স্মৃতিকথা। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপর ওই তথ্যচিত্র তৈরি করছেন পরিচালক অশোক বিশ্বনাথন। আর্থিক সহযোগিতা করছে সাহিত্য অকাদেমি। শিলিগুড়ি সুভাষপল্লিতে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় রোডে সাহিত্যিকের বাড়িতে রবিবার তারই শ্যুটিং করলেন পরিচালক। শিলিগুড়ির পর কাটিহারেও এ দিন শ্যুটিং করেন।
এ দিন সুভাষপল্লির বাড়িতে হাজির ছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দিদি ঝর্না, দিদির ছেলে, ছেলের বউ, নাতি, ভাই দিব্যেন্দু। দিব্যেন্দু এবং তাঁর স্ত্রী মালবিকা বর্তমানে ওই বাড়িতে থাকেন। ঝর্না থাকেন দেশবন্ধুপাড়ায়। ঝর্নাদেবী জানান, তাঁর সঙ্গে ভাই শীর্ষেন্দুর বয়সের পার্থক্য দুই বছরের। বাবা মণীন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায় রেলের কাজে বদলি হতেন নানা জায়গায়। তাই তাঁদেরও নানা জায়গায় থাকতে হত। তেমনই এক সময় কেটেছে কাটিহারে।
কাটিহারের স্মৃতির কথায় তিনি জানান, স্কুলে পড়ার সময় শীর্ষেন্দু লিখতে চাইতেন না। লেখার কিছু থাকলে ঝর্নাদেবীকে লিখে দিতে হত। তাঁদের ভাই-বোনের এই ভালবাসার সম্পর্ক এখন বিরল। সেই ভাই যখন একের পর এক গল্প, উপন্যাস লেখেন, তখন তিনি অবাক হয়ে যান, সেই সব দিনের কথা ভেবে। কলমের বদলে ঝাঁটার কাঠি ভেঙে নিয়ে স্কুলে যেতেন শীর্ষেন্দু। কালিতে তা ডুবিয়ে লিখতেন। স্কুলে যেতেন খালি পায়ে। জিজ্ঞাসা করলে বলতেন কত গরিব পড়ুয়া রয়েছে তারা জুতো পরতে পারে না। তারা যে ভাবে স্কুলে যায় সে ভাবেই যাবেন। কোথাও গেলে তাঁকে ছাড়া শীর্ষেন্দু যেতেন না। ঝর্নাদেবীর বিয়ে হলে তখন দূরত্ব তৈরি হয়। ভাই দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘দাদা ছিল বরাবর মায়ের নেওটা। মায়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরত। মায়ের কাছ থেকে শিখে ভাল রান্নাও করতে পারে।’’
দিদি এবং ভাইয়ের সেই কথা ক্যামেরা বন্দি করছিলেন পরিচালক। বাড়ির লোকেরা তাঁকে দেখিয়ে দেন শিলিগুড়ি এলে কোন ঘরটায় থাকেন শীর্ষেন্দু। সে সবের ছবি তোলা হয়। পরিচালক জানান, ‘‘সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখাতে অধ্যাত্ম চেতনা, সুররিয়ালিস্টিক ভাব, ছোটদের জন্য লেখার দিকগুলো তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হচ্ছে। তাঁর একাধিক গল্পের চলচ্চিত্রায়ন হয়েছে। ঘুরে ফিরে আসবে সে সব।’’ নবনীতা দেবসেন, প্রফুল্ল রায়, আবুল বাসার, সমরেশ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের মতো ব্যক্তিদের কথা থাকবে তাঁর সম্পর্কে। ২৭ মিনিটের তথ্যচিত্রটি শিলিগুড়িতেও দেখানোর ব্যবস্থা করতে চান তাঁরা।