Shola

বিকোবে কি সাজ, চিন্তায় শোলাশিল্পীরা

শিল্পীদের আক্ষেপ, প্রতি বছর এই সময়ে তাঁদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। বাড়ির পুরুষ, মহিলা এমনকি ছোটরাও কাজে হাত লাগায়। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে ব্যস্ততা নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০২
Share:

হাতে-হাতে: তৈরি হচ্ছে শোলার কদম ফুল। নিজস্ব চিত্র

ওঁরাই তৈরি করেন অলঙ্কার, মুকুট, মালা। আর শোলার তৈরি সে সমস্ত অলঙ্কারে সেজে ওঠে দুর্গা প্রতিমা। কিন্তু করোনা আবহে এ বার পুজো নিয়ে ধোঁয়াশায় সকলেই। তাই পুজো হবে কিনা, সাজ বিক্রি হবে কিনা, তা নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় শোলাশিল্পীরা।

Advertisement

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খারিজা বেরুবাড়ি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মালিপাড়ায় বাস এই শোলাশিল্পীদের। এখানে ৪৫টি পরিবার এখনও নির্ভরশীল এই কুটিরশিল্পের উপরে। দীর্ঘদিন ধরে বংশপরম্পরায় তাঁরা এই কাজ করে আসছেন। শিল্পীরা জানালেন, প্রতি বছর পুজোর দেড়মাস আগে থেকেই শুরু হয় শোলার খোঁজ। সেই ভাট শোলা জোগাড় করা হয় তিস্তার দমনী চড় থেকে। তার পরে শোলা শুকিয়ে অলঙ্কার তৈরির উপযোগী করা হয়। সেই শোলা মাপ মত কেটে রং করে তৈরি হয় প্রতিমার সাজ, মুকুট, অলঙ্কার। তৈরি হয় মালা, কদম ফুলও।

শিল্পীদের আক্ষেপ, প্রতি বছর এই সময়ে তাঁদের ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়। বাড়ির পুরুষ, মহিলা এমনকি ছোটরাও কাজে হাত লাগায়। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে ব্যস্ততা নেই। অনেকেই জানালেন, প্রতি বছর তাঁরা চিন্তায় থাকেন, কাজের সঠিক মূল্য মিলবে কিনা, কিন্তু এ বার চিন্তা, আদৌ সেগুলি তৈরি করবেন কিনা, আর করলেও বিক্রি হবে কিনা।

Advertisement

মালিপাড়ার এক বাসিন্দা দিগেন মালাকার বলেন, ‘‘আমাদের তৈরি শোলার শিল্পকর্মের চাহিদা রয়েছে জলপাইগুড়ি, হলদিবাড়ি, শিলিগুড়িতে। এ বছর এখনও কেউ যোগাযোগ করেননি। ঝুঁকি নিয়ে কিছু কাজ শুরু করলেও পুরমাত্রায় এখনও কিছু করা হচ্ছে না।’’

আর এক বাসিন্দা কল্যাণী মালাকার বলেন, ‘‘সরকার থেকে আমরা কোনও শিল্পী ভাতা পাই না। পুজো ও ভোটের সময়ে কত প্রতিশ্রুতি মেলে, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। ফলে বর্তমান প্রজন্মও এই শিল্পে উৎসাহ হারাচ্ছে। আমরা চাই এই কুটিরশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে এগিয়ে আসুক সরকার।’’ এক বাসিন্দা বাসন্তী মালাকার বলেন, ‘‘বাচ্চাদের নতুন জামাকাপড় দিতে দিনরাত এক করে কাজ করি। এ বছর কি হবে জানি না।’’ খারিজা বেরুবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রেবতী রায় বলেন, ‘‘শিল্পীদের ভাতার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement