WB panchayat Election 2023

প্রার্থী তালিকায় নাম নেই, যোগ বিজেপিতে

দল সূত্রে খবর, জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতেও পঞ্চাশ শতাংশের বেশি আসনে নতুন মুখ আনা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩ ০৮:৩৭
Share:

দলবদল: মফিজুল হক, পরিক্ষিত রায়-সহ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যের শাসকদলের প্রার্থী তালিকায় অধিকাংশই এ বার নতুন মুখ। আর তার জেরে তীব্র অসন্তোষ দানা বেঁধেছে দলে। এমনকি, দল ছেড়ে গেরুয়া দলে যোগও দিয়েছেন অনেকেই। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, পুরনোদের উপরে কি ভরসা হারিয়েছে রাজ্যের শাসক দল? নাকি স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তি তুলে ধরতেই বেশিরভাগ পুরনোদের বাদ দেওয়া হয়েছে?

Advertisement

দল সূত্রে খবর, জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েতেও পঞ্চাশ শতাংশের বেশি আসনে নতুন মুখ আনা হয়েছে। জেলা পরিষদে ৩৪টি আসনে ২৫ জন নতুন মুখ। পুরনোদের মধ্যে নয় জন জেলা পরিষদের টিকিট পেয়েছেন। এর পরেই বুধবার দিনহাটা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি মফিজুল হক ও ওই পঞ্চায়েত সমিতিরই বিদায়ী সহ-সভাপতি পরীক্ষিত রায় অনুগামীদের নিয়ে বিজেপি যোগ দেন। কোচবিহার ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা মহেশ্বর বর্মণও বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির কোচবিহার জেলা কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের হাত ধরে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেন।

মফিজুল বলেন, ‘‘তৃণমূল এখন বাম দলে পরিণত হয়েছে। যাঁরা বাম নেতা ছিলেন, তাঁরাই এখন তৃণমূলের নেতা। তাঁদেরই প্রার্থী করা হচ্ছে। তৃণমূলের সক্রিয় কর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। হচ্ছে টাকার খেলা। তাই বিজেপিতে যোগ দিই।’’ মহেশ্বর বলেন, ‘‘তৃণমূলে কাজ করার অবস্থা নেই। যাঁরা দুর্নীতিতে যুক্ত, তাঁদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

দলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, ‘‘দল যাঁদের অনুমোদন দিয়েছে, তাঁরা প্রার্থী হয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ থাকার কথা নয়। যাঁরা দলবিরোধী কাজ করবেন, তাঁদের দলে জায়গা হবে না।’’ নিশীথ বলেন, ‘‘দলের পুরনো কর্মীদের অসম্মান করছে তৃণমূল। যাঁরা কাজ করতে ইচ্ছুক, বিজেপিতে স্বাগত।’’

ক্ষোভের কথা জানান কোচবিহারে জেলা পরিষদের বিদায়ী সহ-সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়াও। প্রার্থী হতে না পেরে ক্ষুব্ধ পুরনোদের অনেকেই। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘সংরক্ষণ থেকে শুরু করে নানা কারণে কিছু পুরনো নাম বাদ গিয়েছে। নতুন যাঁদের প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকেই যোগ্য। সকলে মিলে লড়াই করা হবে। নতুন-পুরনো সবাই দলের সঙ্গে থাকবেন বলে আশা করছি।’’

কোচবিহার জেলায় এ বার তিনটি স্তরে কিছু আসন বেড়েছে। পঞ্চায়েতে আসন ২,৫০৭টি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৮৩টি ও জেলা পরিষদে ৩৪টি আসন। তিন ক্ষেত্রে পঞ্চাশ শতাংশের উপরে নতুন মুখ আনা হয়েছে। পুরনোদের অনেকের অভিযোগ, এ বার ঠিক ভাবে প্রার্থী নির্বাচন হয়নি। টাকার বিনিময়ে দুর্নীতিগ্রস্তদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পুষ্পিতা ডাকুয়া বলেন, ‘‘কেন প্রার্থী তালিকায় আমার নাম রাখা হল না, জানা নেই। দীর্ঘ সময় ধরে দল করেছি, মানুষের কাজ করেছি। তার মূল্যায়ন নেই।’’ মঙ্গলবার হাড়িভাঙা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শঙ্কর দেবনাথও অভিযোগ করেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের টিকিট দেওয়া হয়েছে।

ভোটে টিকিট না পেয়ে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তুফানগঞ্জ ১ ব্লক (বি) তৃণমূলের বিদায়ী সভাপতি প্রদীপ বসাক। লিখেছেন, ‘‘দলকে ভালবেসে ক্ষতি হয়েছে। প্রার্থী নির্বাচনে আমাকে অযোগ্য মনে করা হয়। অযোগ্যতা নিয়ে কাজ করা সম্ভব কী? ভেবে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement