প্রতীকী চিত্র।
উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা রাজ্য কমিটি গড়ল গেরুয়া ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এভিবিপি)। সংগঠন সূত্রের খবর, ১৮ জুলাই শিলিগুড়িতে আয়োজিত সংগঠনের উত্তরবঙ্গ সম্মেলনে গোটা উত্তরবঙ্গের জন্য একটি পৃথক রাজ্য কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশিু, সংগঠনের দক্ষিণবঙ্গের জন্যেও আলাদা রাজ্য কমিটি থাকল। অর্থাৎ, এক রাজ্যে দুটো রাজ্য কমিটি। রাজনৈতিক সংগঠনগুলি বলছে, কোনও রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক সংগঠনে উত্তরবঙ্গ রাজ্য কমিটি এই প্রথম। গত বছর থেকেই এভিবিপি এমন কমিটি গডার কাজ শুরু করেছিল।
বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, একটি রাজ্যের একটা অংশ বা কয়েকটা জেলা মিলিয়ে আলাদা রাজ্য কমিটি তৈরির কারণ কী! সেখানে উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক কমিটি, উত্তরবঙ্গ কমিটি গঠন হতে পারে। সেখানে আলাদা রাজ্যের মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে সামনে রেখে কমিটি গঠন কি তা হলে আলাদা রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করার শামিল? বিরোধীদের দাবি, গোটাটাই গেরুয়া শিবিরের পরিকল্পনা মাফিক প্রচার কর্মসূচির অঙ্গ। বিজেপির একাংশের তোলা আলাদা উত্তরবঙ্গ রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই এসব শুরু হয়েছে।
যদিও উত্তরবঙ্গ রাজ্য কমিটি বা প্রান্ত কমিটির নবনির্বাচিত সম্পাদক বিরাজ বিশ্বাস বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘‘সাংগঠন বাড়াতে আমরা উত্তরবঙ্গে আলাদা কমিটি গড়েছি। অনেক রাজ্যে আমাদের এ ভাবে ভাগ করা কমিটি রয়েছে। উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার জন্য আলাদা কমিটি করেছি, এমন কোনও বিষয় নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই। তবে উত্তরবঙ্গ নানা বিষয়ে বঞ্চিত। বঞ্চনার অভিযোগগুলিকে সমর্থন করি।"
সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ জন বার্লা উত্তরবঙ্গের একাংশকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কথা বলেন। পরে কেউ কেউ আলাদা রাজ্যের কথা বলেন বলে অভিযোগ। বার্লার বক্তব্যকে প্রথমে সমর্থন করে এগিয়ে আসেন শিখা চট্টোপাধ্যায়, দুর্গা মুর্মুর মতো বিজেপি বিধায়কেরাও। পাহাড়ে একইভাবে দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা, গোর্খা লিগ নেতা প্রতাপ খাতি বা সিপিআরএমের আরবি রাই আলাদা রাজ্যের দাবির কথা তোলেন। তৃণমূল পাল্টা প্রচারে নামলে রাজ্য বিজেপির তরফে বাংলা ভাগের কোনও প্রশ্ন নেই বলে জানানো হয়। এরই মধ্যে এভিবিপি উত্তরবঙ্গের জন্য আলাদা রাজ্য কমিটি গড়ায় সেই জল্পনা শুরু হয়েছে।
যদিও সংগঠনের একাংশ মনে করছে, রাজ্যের শিক্ষা নীতি, রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে সংগঠনকে কাজ করতে বলা হয়েছে। সেখানে রাজ্যের দাবি বা কেন্দ্রী শাসিত অঞ্চলের বিষয় একেবারেই নেই।