দিনহাটার গিতালদহের দরিবস সীমান্তের গ্রামে বৈঠক বিএসএফ আধিকারিকদের। ছবি: সুমন মণ্ডল।
বাড়ানো হয়েছে সীমান্তের নিরাপত্তা। নদীপথে নামানো হয়েছে স্পিড বোট। রাতে ‘নাইট ভিশন’ ক্যামেরায় চোখ রাখা হচ্ছে সীমান্তের রাস্তায়। ড্রোন উড়িয়েও চলছে নজরদারি। এর পরেও বাড়তি সতর্ক বিএসএফ। পুলিশ ও বিএসএফ যৌথ ভাবে সীমান্তের গ্রামে গ্রামে বৈঠক করে সতর্ক করছেন বাসিন্দাদের। বুধবার কোচবিহারের একাধিক গ্রামে ওই বৈঠক হয়। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে মেখলিগঞ্জের তিন বিঘা করিডরেও। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতির জেরে সীমান্তে অনুপ্রবেশের ঘটনা হতে পারে। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, জঙ্গি বা অপরাধীরাও এই সুযোগে সীমান্ত টপকানোর চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে কথা মাথায় রেখেই সীমান্তে কড়া নজর রেখেছে বিএসএফ। নজর রাখছে পুলিশও। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সমস্ত দিকেই নজর রাখা হচ্ছে।’’ বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গোলমাল শুরু হতেই সীমান্তে পাহারা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের সেই বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।’’ কোচবিহার জেলার বড় অংশ জুড়ে বাংলাদেশ সীমান্ত। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে প্রায় ৫০৯ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশে এখনও কাঁটাতার নেই।
তার মধ্যে বেশ কিছু অংশে রয়েছে নদীপথ। তুফানগঞ্জের বালাভূত, দিনহাটার নাজিরহাট, গিতালদহ, সিতাইয়ের একাধিক এলাকায় কাঁটাতার নেই। গিতালদহে জারিধরলা ও দরিবস নামে দু’টি গ্রাম ধরলা নদীর ওপারে। ওই নদী ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে ওই দু’টি গ্রামকে আলাদা করেছে। সেখানে কাঁটাতার নেই। নদীপথেই বাংলাদেশ যাওয়া যায়। যেখানে বাংলাদেশের বাসিন্দাদের অবাধ যাতায়াতের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেখানেও পাহারা অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন দিনহাটার গিতালদহের সীমান্ত সংলগ্ন দরিবস ও জারিধরলা এলাকায় বাসিন্দাদের নিয়ে বৈঠক করে বিএসএফের ৯০ নম্বর ব্যাটালিয়ন। বৈঠকে বিএসএফের ৯০ ব্যাটেলিয়নের কোম্পানি কম্যান্ডান্ট বি মিনা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবুল কালাম আজাদ, দিনহাটা থানার গিতালদহ পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। ওই বৈঠকে বিএসএফের আধিকারিক গ্রামবাসীদের বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরে নানা ভাবে সতর্ক করেন। তিনি গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি, বিএসএফের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেন। কুর্শামারির তেঁতুলের ছড়া গ্রাম এবং হলদিবাড়িতেও গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএসএফ।