মধ্যশিক্ষা পর্যদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় ( সাদা টুপি)। নারায়ন দে।
মালদহে একের পরে এক মাধ্যমিকের প্রশ্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাইরে চলে আসা ঘিরে ডামাডোলের মধ্যেই উত্তরবঙ্গ সফরে এলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার তিনি কোচবিহার থেকে আলিপুরদুয়ার, ধূপগুড়ি হয়ে শিলিগুড়িতে যান। পরে সেখান থেকে মালদহে গিয়েছেন। এ দিন মালদহে রয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, অনেকে ‘প্রশ্ন ফাঁস’ বলছেন। প্রশ্ন ফাঁস কিন্তু হচ্ছে না। কিছু লোক প্রশ্ন বার করছে। এর সঙ্গে যে বোর্ডের কেউ যুক্ত নন, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। শিলিগুড়িতে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না খোঁজ নেন রামানুজ।
রবিবার রাতে আলিপুরদুয়ারে পোঁছন পর্ষদ সভাপতি। সোমবার সকালে আলিপুরদুয়ার শহরের দুই প্রান্তে মাঝেরডাবরি উচ্চ বিদ্যালয় ও রবিকান্ত হাই স্কুলে পরীক্ষার ব্যবস্থা দেখতে যান। সেখান থেকে কোচবিহারে খাগরাবাড়ির মণীন্দ্রনাথ হাইস্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্র, পরে রাজারহাটের একটি কেন্দ্রে যান।
মাধ্যমিকের প্রশ্ন ‘ভাইরাল’ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি বলেন, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করা হচ্ছে, চক্রান্ত করা হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে, সিস্টেমটাকে নষ্ট করার জন্য করা হচ্ছে।” তাঁর সংযোজন, “বাইরে থেকে বাচ্চাদের সামনে রেখে এ সব হচ্ছে। কারা করছে, এই জায়গাটা বোঝা দরকার। যারা এই পরীক্ষাকে ঘিরে নাশকতা করতে চাইছে, বিঘ্ন ঘটাতে চাইছে, বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ খেলতে চাইছে, তারা এর উত্তর দেবে।” রামানুজের কথায়, আগে পর্ষদ, সরকারকে এর জন্য দোষ দেওয়ার চেষ্টা হত। কী ভাবে কী হচ্ছে, সেটা এ বার স্পষ্ট। যা ব্যবস্থা নেওয়ার, পর্ষদ নিচ্ছে। বস্তুত, এ দিন যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই মালদহের ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে পর্ষদ সভাপতিকে। তাঁর দাবি, পর্ষদ বা প্রশাসন কিংবা রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার কোনও অভাব নেই। কিছু লোক এটাকে নষ্ট করতে চাইছে। পুলিশ, প্রশাসন তা দেখছে।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি মহকুমার শালবাড়ি হাই স্কুল এবং ধূপগুড়ি গার্লস হাই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। মূলত, কেন্দ্রগুলির ব্যবস্থাপনা, সমস্যা খতিয়ে দেখতেই পরিদর্শন বলে জানা গিয়েছে। শিলিগুড়িতে রামকৃষ্ণ সারদামণি বিদ্যাপীঠ, নীলনলিনী বিদ্যামন্দির ও কৃষ্ণমায়া নেপালি স্কুলে যান রামানুজ। কথা বলেন পরীক্ষার্থীদের সঙ্গেও। তাদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে খোঁজ নেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীক্ষা শুরুর পর পরই প্রশ্নপত্রের ছবি সামাজিক মাধ্যমে আসা প্রসঙ্গে রামানুজ এ দিন বলেন, “কিছু লোক বাইরে থেকে পড়ুয়াদের বলি করছে। কয়েক জনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। আমরা অনেক বার পড়ুয়া, অভিভাবকদের বুঝিয়েছি। প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছি। এই প্রবণতা কমাতে পড়ুয়াদের সচেতন করছি।” আলিপুরদুয়ারেরই কামাখ্যাগুড়ি মিশন হাই স্কুলে পরীক্ষা চলাকালীন এক পরীক্ষার্থীকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে দুই শিক্ষককে শো-কজ়ের পাশাপাশি পরীক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পর্ষদ সভাপতি বলেন, ‘‘শো-কজ় তো একটা পদ্ধতি। পদক্ষেপ করা হবে।’’