রান্না হচ্ছে কোচবিহারের পুলিশ লাইন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র।
মিড-ডে মিল পরিদর্শনে কেন্দ্রীয় দল যে কোচবিহারে ঢুকবে, তার এখনও নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু তা বলে বসে নেই প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেমন পরিদর্শন চলছে, তেমনই স্কুলে-স্কুলেও পরিচ্ছন্ন রাখা হচ্ছে মিড-ডে মিলের রান্নাঘর থেকে খাবারের জায়গা। কেউ কেউ অবশ্য জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের কাছে পেলে স্মারকলিপিও দেবেন তারা। কী করে দিন প্রতি এক জন পড়ুয়াকে সাড়ে পাঁচ টাকার কিছু বেশি দিয়ে খাবার দেওয়া সম্ভব, সে প্রশ্নও তুলবেন তাঁরা। মহকুমাশাসক (কোচবিহার সদর) রাকিবুর রহমান ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি স্কুলে গিয়ে মিড-ডে মিলের অবস্থা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সর্বত্র নজর রেখেছি। কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল আসার কথা রয়েছে। এলে সমস্ত কিছু দেখবে।’’
কোচবিহারে মিড-ডে মিল নিয়ে দু’ধরনের ছবি রয়েছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, হাই স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। সেখানে মিড-ডে মিল রান্নার জন্য আলাদা ঘর যেমন রয়েছে,রয়েছে খাবারের আলাদা ঘরও। বাসনপত্রেরও অভাব নেই। কিছু জায়গায় পরিষ্কার-পরিছন্নতা নিয়ে অবশ্য অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক স্কুলে অনেক ক্ষেত্রেই চিত্র অন্য রকম। অনেক প্রাথমিক স্কুলেই খাবারের জন্য আলাদা করে কোনও ঘর তৈরি করা হয়নি। ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষের বারান্দায় বসেই খাওয়াদাওয়া সেরে নেয়। অনেক স্কুলেই বাসনপত্রের সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ। এমন অবস্থার মধ্যেই কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনে আসতে পারে আঁচ করে অনেকেই গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কোচবিহার জেলা আহ্বায়ক মিঠুন বৈশ্য বলেন, ‘‘যে কোনও পরিদর্শনই ভাল। তাতে কাজের ক্ষেত্র আরও অনেক ভাল হয়। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সব সময়ই পরিদর্শন হয়। এ বার কেন্দ্রীয় দল আসার কথা। এলে ভালই হবে।’’
‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র কোচবিহার জেলা সম্পাদক পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্য জানান, তারা সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় দলের কাছে বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরবেন। তিনি বলবেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল আসবে বলে সব স্কুল ক্ষমতা অনুযায়ী ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু পরিকাঠামো ও খাবারের জন্য সামান্য যে টাকা দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে সব করা সম্ভব নয়। তা জানানো হবে দলকে।’’
‘বঙ্গীয় নবউন্মেষ প্রাথমিক শিক্ষক সঙ্ঘ’-এর কোচবিহার জেলা সম্পাদক তপন ভৌমিক বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল আসবে শুনে অনেক স্কুলই পরিছন্নতায় জোর দিয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামো উন্নয়ন সম্ভব নয়।’’