স্কুলের নানা সমস্যা। তা নিয়ে কথা বলতে গেলেই শিক্ষকেরা বলেন প্রধান শিক্ষকের কাছে যেতে। আবার, প্রধান শিক্ষকই দিনের পর দিন স্কুলে আসেন না বলে অভিযোগ। এমন দাবি তুলেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিল ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা।
মঙ্গলবার চাঁচলের গোয়ালপাড়া হাইস্কুলে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকদেরও একাংশও। শিক্ষকেরা আসলেও তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে এ দিন পঠন-পাঠনও হয়নি স্কুলে। স্কুলের সমস্যা না মেটা পর্যন্ত তালা খোলা হবে না বলেও হুমকি দিয়েছে পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের অভিযোগ, স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২২০০। শ্রেণিকক্ষ রয়েছে ২৫টি। বেশিরভাগ ঘরেই পাখা নেই। আবার এত পড়ুয়ার জন্য যে কয়েকটি শৌচাগার রয়েছে, তাও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে রয়েছে। কিছুদিন ধরে নেই পানীয় জলও। বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের দাবি, সমস্যার কথা শিক্ষকদের জানালেই তাঁরা প্রধান শিক্ষককে দেখিয়ে দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষককেই স্কুলে পাওয়া যায় না। তাই অন্য শিক্ষকেরাও যখন ইচ্ছে স্কুলে আসেন-যান।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমান গত ১৫ তারিখের পর টানা স্কুলে আসেননি। তার আগেও তিনি নিয়মিত স্কুলে আসতেন না বলে অভিযোগ। এ দিকে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, পরিচালন সমিতির সভাপতি তাকে হুমকি দেওয়ায় তিনি স্কুলে যাচ্ছেন না। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ জুন পরিচালন সমিতির সঙ্গে বিবাদের পর থেকেই প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছেন। ওইদিন স্কুলে পরিচালন সমিতির সভা ডাকা হয়েছিল।
প্রধান শিক্ষক ওবাইদুরের অভিযোগ, ‘‘আমি যে কিছুদিন স্কুলে যাব না তা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককেও জানিয়েছি।’’ প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পরিচালন সমিতির সভাপতি মহম্মদ রেজাউল হকের দাবি, আমাকে বাদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক অবৈধভাবে সভা ডেকেছিলেন। তাই অন্য সদস্যেরা সভার রেজোলিউশনে সই করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘উনি তো স্কুলে না গিয়েও হাজিরা খাতায় সই করেন। এ সব নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করায় এখন আমার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশিস চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কুল বন্ধ করলে পড়ুয়াদেরই ক্ষতি। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে তা দেখছি।’’