Saraswati Puja 2023

অসুখকাল কাটিয়ে বাণীবন্দনায় নবীন মন

মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিকে বসন্ত পঞ্চমীও বলা হয়। যেন এ দিনেই বসন্তের বিঘোষণা। এ বার তুলনামূলক ভাবে উষ্ণ আবহাওয়া উত্তরের সব জনপদে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৮
Share:

আলপনা: শিলিগুড়ির একটি স্কুলে। ছবি: বিনোদ দাস

‘ও দুটো দিন তুমি যেন অন্য নীরা’— লিখেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। কবিতার সেই দু’টো দিনের মধ্যে একটি দোল, অন্যটি সরস্বতী পুজো। জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি, মালদহ থেকে কোচবিহার, চা-বাগান, পাহাড়ে বুধবার থেকেই বাণীবন্দনা কার্যত শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতি বছরই গ্রাম-শহর-মফস্‌সলে সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতির হাত ধরে উৎসব শুরু হয়ে শুক্লা পঞ্চমীর কয়েক দিন আগে থেকেই। এক দিকে, স্কুলে স্কুলে প্রতিমা রাখার বেদীতে আঁকাআঁকি শুরু হয়েছে, অন্য দিকে, কুমোরপাড়ায় প্রতিমার সেজে তৈরি হয়ে ওঠা চলছে। বাজারে দোকানের কাচের দেওয়ালে বিপণন-কৌশলে বাসন্তী রঙের শাড়ি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনার উৎপাতে গত দু’বছর ছবিটা বদলে গিয়েছিল। কোভিড-আবহ পুজোর উন্মাদনায় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অসুখের আড়ষ্টতা নিয়েই কিছু কিছু পুজোর আয়োজন হয়েছিল স্কুল-কলেজে, পাড়ায়, বাড়িতে। কোভিড-আবহের বাড়াবাড়ি পেরিয়ে এ বার পুজো নিয়ে ফের সেই চেনা উন্মাদনা। প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রায় নাচ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়া, আড্ডার আসর— সব আবার পরিচিত মাহাত্ম্যে।

Advertisement

পাঁজি অনুযায়ী, বুধবার বিকেলের পর থেকে পুজোর তিথি শুরু হয়েছে। যদিও বেশির ভাগ স্কুল-কলেজে আজ, বৃহস্পতিবার সরস্বতী পুজো। বুধবার রাস্তায় রাস্তায় স্কুলপোশাক পরা ছাত্রছাত্রীদের প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রায় দেখা গিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি কলেজের পড়ুয়ারাও নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ব্যানার নিয়ে ঠাকুর নিয়ে গিয়েছেন। কম বয়সিদের ভিড় দেখা গিয়েছে জলপাইগুড়ির তিস্তার বাঁধে, শিলিগুড়ির বিভিন্ন পার্কে, কোচবিহার রাজবাড়ি চত্বরে। এক প্রধান শিক্ষিকার কথায়, ‘‘সরস্বতী পুজোয় উঁচু ক্লাসের ছেলেমেয়েরা স্বাধীনতা পেতে শেখে। হয়তো স্কুল থেকে একটু দূরে পার্কে গেল বা খাবারের দোকানে। এ তো আমাদের মেয়েবেলা থেকেই চলে আসছে।’’

মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিকে বসন্ত পঞ্চমীও বলা হয়। যেন এ দিনেই বসন্তের বিঘোষণা। এ বার তুলনামূলক ভাবে উষ্ণ আবহাওয়া উত্তরের সব জনপদে। স্কুলে-কলেজে ঠাকুর পৌঁছে দিয়ে রাস্তায় হাঁটতে দেখা গিয়েছে নবীন পড়ুয়াদের। বসন্তের সঙ্গে প্রেমের অনুষঙ্গ জড়িয়ে কবি কল্পনার নারী নীরাকে বছরের দু’টো দিনে ‘অন্য’ রূপে দেখেছিলেন। এ দিনও প্রতিমা আনার ভিড়ে, রেস্তরাঁর আড্ডায় বা রাস্তার নবীন-মিছিলেও কত শত চোখ অনবরত ‘অন্য’ রং-ই খুঁজেছে। আজও স্কুলপ্রাঙ্গণে, স্কুলে যাওয়ার পথে চোখে-মনে রং-রঙিন বসন্তেরই আলিম্পন দেখা যাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement