ইংরেজবাজারের হায়াত ভবনে। (নীচে) চোপড়ার দাসপাড়া ও লক্ষ্মীপুরেও বিজয় মিছিল করেন কংগ্রেস ও সিপিএম কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
মাটি আলগা হয়েছিল পঞ্চায়েতেই। বিধানসভা ভোটে ‘গঙ্গা ভাঙনের’ মতো সে মাটি আরও ভেঙেছে। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটের আগে, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল (বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের জয়) ‘বাঁধের’ মতো কাজ করবে, দাবি মালদহ ও দুই দিনাজপুরের বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের। বৃহস্পতিবার মিষ্টি মুখ থেকে শুরু করে মিছিলে শামিল হওয়া পর্যন্ত—কার্যত বিজয় উৎসব পালন করলেন বাম, কংগ্রেস নেতারা।
পক্ষান্তরে, সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল ভুলে ত্রিপুরা, মেঘালয়ের সাফল্য নিয়ে ব্যস্ত থাকল গেরুয়া শিবির। এ দিন জেলারই কার্যালয়গুলিতে আবির, মিষ্টি নিয়ে ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের সাফল্য পালন করেন বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। উত্তর মালদহের বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “ত্রিপুরা, মেঘালয়ে আমরা সাফল্য পেয়েছি। বাংলাতেও সাফল্য মিলবে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘সাগরদিঘিতে ফল খারাপ হয়েছে ঠিকই। মেঘালয়ের মত জায়গায় পাঁচটা আসন জিতেছে তৃণমূল। প্রভাব পড়লে, তারও পড়বে।’’
তবে সাগরদিঘির বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলকে এখন থেকেই মানুষের দুয়ারে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিন জেলার বাম, কংগ্রেস নেতারা। এ দিন সকাল থেকেই কোতোয়ালি ভবনের বাড়িতে টিভির পর্দায় সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলের উপরে নজর রাখেন কংগ্রেসের মালদহের পর্যবেক্ষক ইশা খান চৌধুরী। বেলা গড়াতেই ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। এর পরে, কংগ্রেস জেলা সভাপতি তথা সাংসদ বাবা আবু হাসেম খান চৌধুরীকে (ডালু) নিয়ে হায়াত ভবনে পৌঁছন ইশা। দলীয় নেতা, কর্মীদের সঙ্গে আবির খেলায় মেতে ওঠেন তিনি। মিষ্টি মুখও হয়েছে। তিনি জানান, মাধ্যমিকের জন্য কর্মীদের রাস্তায় নেমে মিছিল করে বাজি, পটকা ফাটাতে নিষেধ করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের চোপড়ার দাসপাড়াতে মিছিল করেন বাম, কংগ্রেস নেতারা। মিষ্টি বিলি করেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মোহিত সেনগুপ্ত।
২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস জোটের কাছে ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই বাম, কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। দুই দিনাজপুরেও ভাল ফল করেছিল জোট। তবে এ বারের বিধানসভা ভোটে মালদহ ও রায়গঞ্জেও ধাক্কা খায় বাম, কংগ্রেস। এমন অবস্থায় গঙ্গা পাড়ের জেলা মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির ফল নিয়ে আশাবাদী কংগ্রেস। ডালু বলেন, ‘‘মানুষ দুর্নীতির সঙ্গে নেই, সাগরদিঘির ফলেই তা স্পষ্ট।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস বলেন “অবাধ নির্বাচন হলে, শাসক দল কোথাও দাঁড়াতে পারবে না। আমরা জোটে অন্যদেরও স্বাগত জানাব।”