প্রতীকী ছবি।
করোনা পজ়িটিভ হওয়া ব্যক্তিদের রাখার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে সেফ হোমের। কিছু কিছু জায়গায় সেফ হোমে পরিকাঠামো সংক্রান্ত নানা অভিযোগ উঠেছে। এ বার ধরা পড়ল যে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিকমতো না করেই চালু করে দেওয়া হয়েছে সেফ হোম। সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি শহরের ইন্ডোর স্টেডিয়াম, শহরের বাইরে হাতিঘিসা এবং বাতাসি কোনওটিতেই ন্যূনতম অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই বলেই সাম্প্রতিক একটি ফায়ার অডিটে ধরা পড়েছে। অথচ এই কেন্দ্রগুলিতে ইতিমধ্যেই রোগী থাকতে শুরু করেছে।
সূত্রের খবর, অগ্নিনির্বাপণ দফতরের তরফে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চার রকমের আগুনের বিপদ রয়েছে এই সেফ হোমগুলিতে। দ্রুত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজের আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
অগ্নিনির্বাপণ দফতর সূত্রে খবর, ওই সেফ হোমগুলিতে চার রকমের আগুন লাগতে পারে বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে। কাঠ, কাগজ জাতীয় দাহ্য পদার্থ থেকে, পেট্রল, ধাতব জিনিস থেকে, এ ছাড়া গ্যাস এবং ইলেকট্রিকের আগুন এই কেন্দ্রগুলিতে যে কোনও সময় লাগতে পারে বলে সাবধান করা হয়েছে। এই কারণে সেখানে দু’রকমের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা অবিলম্বে বসাতে বলা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপণ দফতরের এক কর্তা জানান, তাঁদের বলা হয়েছিল পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে। অডিট করা হয়েছে। দফতরের মাপকাঠিতে সেফ হোমগুলিতে অন্তত ৩০ শতাংশ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা অবিলম্বে স্থাপন করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশে একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে আগুন লেগে বেশ কয়েকজন মারা যান। এই ধরনের ঘটনা রুখতে সেফ হোমে, কোয়রান্টিন কেন্দ্রের মতো জায়গায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন শহরের চিকিৎসকদের একটি বড় অংশ।
দমকল বিভাগের অডিটের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা মনে করছেন, কেবল পরিকাঠামো বা নির্বাপক যন্ত্র থাকাই যথেষ্ট নয়। হোমগুলির দায়িত্বে থাকা একটি করে দলকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে তারা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি চালাতে পারেন। কিন্তু এসব না করেই বাতাসি এবং হাতিঘিসায় অনেক আগে থেকেই রোগী রাখা চলছে বলে অভিযোগ। শিলিগুড়িতে ইন্ডোর স্টেডিয়ামেও গত তিনদিন থেকে রোগী ভর্তির কাজ চলছে। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের লিম্বুটারিতে সেফ হোম বন্ধ করে রাখা হয়েছে, তবে সেখানেও নেই এই পরিকাঠামো।
কিন্তু আগে তৈরি করে পরে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কেন যাচাই করা হচ্ছে? কেন আগে এসব খতিয়ে দেখে রোগীদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও প্রশাসন সূত্রে দাবি, এই সমস্ত পরিকাঠামো নতুন করে তৈরি করা হয়েছে এবং দ্রুত করতে হয়েছে। তবে এগুলো করার পরেই প্রশাসনের তরফেই অডিট করানো হয়েছে। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যাচাই করা হয়েছে সম্প্রতি। দমকল বিভাগের দেওয়া পরামর্শ কিছু কিছু কার্যকর করা হচ্ছে। বাকিগুলি ও দ্রুত সেরে ফেলা হবে।’’