জনসংযোগে সাবিত্রী। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। ছিলেন দলের জেলা সভাপতিও। তবে বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হতেই রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন মালদহের তৃণমূলের নেত্রী সাবিত্রী মিত্র। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি সফল করতে সেই সাবিত্রীকেই মানিকচকের ময়দানে নামল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার মানিকচক বিধানসভার নুরপুর ও মিল্কির আটগামা গিয়ে জনসংযোগ যাত্রা করলেন সাবিত্রী। তাঁকে পুরোনো মেজাজে পেয়ে উচ্ছ্বসিত মানিকচকের তৃণমূল নেতৃত্ব।
সালটা ২০১১। রাজ্যে পালা বদল হলেও কংগ্রেসের গড় মালদহে নজর কাড়তে পারেনি তৃণমূল। ওই বছর জেলায় তৃণমূলের টিকিটে একমাত্র জয়ী হয়েছিলেন সাবিত্রী মিত্র। তিনি মানিকচক বিধানসভা থেকে জয়ী হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছিলেন সাবিত্রী। সেই সময় তৃণমূলের জেলা সভাপতিও ছিলেন তিনি। তবে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মালদহের দু’টি আসনেই ভরাডুবি ঘটে তৃণমূলের। সাবিত্রীকে সরিয়ে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মোয়াজ্জেম হোসেনকে।
সেই সময় থেকেই জেলার রাজনীতিতে কোণঠাসা হতে শুরু করেন সাবিত্রী। গত, বিধানসভা নির্বাচনে মানিকচক থেকে ফের প্রার্থী হন তিনি। যদিও প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। তার পরে দলের জেলা কমিটি থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাঁকে। তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্লক কমিটিতে। তারপর থেকেই দলের কর্মসূচিতে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনেও জেলায় তৃণমূলের ভরাডুবি ঘটে। মানিকচক বিধানসভায় তৃণমূল, কংগ্রেসকে টেক্কা দেয় বিজেপি। মানিকচকে বিজেপি ৮১ হাজার ৮০৯টি, কংগ্রেস ৫১ হাজার ৯২০ এবং তৃণমূলের ঝুলিতে ৪৭ হাজার ৭৮৫টি ভোট।
বিজেপির এই উত্থানে চিন্তিত তৃণমূল শিবিরে। তাই মানিকচকে ঘুরে দাঁড়াতে সাবিত্রীকেই ময়দানে নামিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর তোড়জোর শুরু করল তৃণমূল। এ দিন বিকেল থেকে মানিকচক বিধানসভায় জনসংযোগ যাত্রা শুরু করেন সাবিত্রী মিত্র। এদিন প্রথমে তিনি যান মানিকচকের নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লালবাথানি গ্রামে। সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তারপরে ‘দিদিকে বলো’-র কার্ড বিলি করেন সাবিত্রী। সেখান থেকে তিনি চলে যান মিল্কির আটগামা গ্রামে। কোথাও গ্রামবাসীদের কাছে শুনলেন বেহাল রাস্তার কথা, কোথাও শুনলেন পানীয় জল, নিকাশির সমস্যার বিষয়। বাধর্ক্য ভাতা, বিধবা ভাতা মিলছে না বলেও অভিযোগ শুনলেন তিনি। অভিযোগ শুনে পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। তিনি বলেন, “মানুষের কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা গুলি সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের জানানো হচ্ছে।” আর সাবিত্রীকে পুরোনো মেজাজে পেয়ে উচ্ছ্বসিত দলের কর্মী সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, মানিকচকে কলেজ, মডেল স্কুল, ভুতনি সেতু তৈরিতে সাবিত্রীর অবদান রয়েছে। তিনি মাঠে নামলে মানুষের কাছে সেই প্রকল্প সম্পর্কে তুলে ধরা হবে। মানিকচকের বিধায়ক কংগ্রেসের মোত্তাকিম আমল বলেন, “মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তাই জনসংযোগ করে কোনও লাভ হবে না।”