সাবিত্রী মিত্র। —ফাইল চিত্র
কখনও কর্মীদের সঙ্গে চৌকিতে বসে প্লেটে ঢেলে চা খেলেন। কখনও আবার মাটিতে বসেই রুটি, আলুর দম দিয়ে সারলেন নৈশভোজ। মঙ্গলবার রাতে মালদহের মানিকচকে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে গিয়ে এই ভাবেই সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে সময় কাটালেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র।
২০১১ সালে মানিকচক থেকে জেলায় একমাত্র সাবিত্রীই তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন। রাজ্যের মন্ত্রিসভায় ঠাঁইও হয় তাঁর। নারী ও সমাজকল্যাণের মতো দফতরের মন্ত্রী করা হয়েছিল তাঁকে। তিনি আড়াইডাঙা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে একাধিকবার জয়ী হয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতিও ছিলেন। তবে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটে সাবিত্রীর। তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরেই জেলার রাজনীতিতে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে গুরুত্ব কমতে থাকে তাঁর।
এই পরিস্থিতিতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া সাবিত্রী। মাসখানেক আগে মানিকচক বিধানসভায় এই কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে অংশ নেন তিনি। এবার সেই কর্মসূচিতে ফের সামিল হলেন। মানিকচক ব্লকের ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়তের ঝাটোন টোলা গ্রামে রাত্রিযাপন করেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মণ্ডল, পঞ্চায়েত প্রধান নাহারুল শেখ এব অন্য নেতারাও ছিলেন এই কর্মসূচিতে। গ্রামে ঘুরে ঘুরে ‘দিদিকে বলো’ অ্যাপের নম্বর কার্ড বিলি করেন তিনি। একইসঙ্গে, গ্রামবাসীদের রাস্তা, পানীয় জল, ভাতার মতো অভিযোগ শুনে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন।
কর্মীদের সঙ্গেই চৌকিতে বসে খাওয়া-দাওয়া সারেন সাবিত্রী। তিনি বলেন, “খাওয়ায় আমার কোনও বাছবিচার নেই। রাতে আমি খুব হাল্কা খাই। রুটি, আলু-পটলের তরকারি দিয়ে সকলের সঙ্গে বসে রাতের খাবার খেয়েছি।” মানিকচকে সাবিত্রী যোগাযোগ বাড়ানো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে দলেরই একাংশ। তাঁদের দাবি, সাবিত্রী মন্ত্রী থাকাকালীন ভুতনি সেতু, কলেজ, আইটিআই কলেজ, মডেল স্কুল করেছেন। তারপরেও তাঁকে হারতে হয়েছিল। যার জন্য মানিকচকে যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফের তিনি মানিকচকে যাতায়াত শুরু করেছেন।
যদিও কোনও লাভ হবে না বলে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেসের বিধায়ক মোত্তাকিম আলম বলেন, “ওঁর সঙ্গে মানুষ নেই। তিনিও বুঝতে পেড়েছেন।” তবে বিরোধীদের কটাক্ষকে আমল দিতে নারাজ সাবিত্রী।