উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগ। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সদ্যোজাত বদলের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য। শুক্রবার এ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের একটি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি মহকুমার পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়ার বাসিন্দা বৃষ্টি বিশ্বাস নামে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। পরিবারের দাবি, প্রসূতি বিভাগে ভর্তির পর রাতেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন বৃষ্টি। প্রসূতির শারীরিক পরিস্থিতির কথা ভেবে রাতটুকু তাঁকে হাসপাতালে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। শুক্রবার সকালে পরিবারের সদস্যেরা বাড়ি গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তখন তাদের মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফোন করে বলা হয় যে, বৃষ্টি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এ কথা শুনে আবার হাসপাতালে ছোটেন বৃষ্টির পরিবারের লোকজন। শুরু হয় প্রসূতি বিভাগে কর্মরত নার্সদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা।
প্রসূতির পরিবার দাবি করেছে , বৃহস্পতিবার রাতে যখন সদ্যোজাতকে পরিবারের কাছে শনাক্ত করতে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন পুত্রসন্তান দেখানো হয়েছিল। তারা কাগজেও সই-ও করেছেন। হঠাৎ কী করে ছেলেটা মেয়ে হয়ে গেল? ওই নিয়ে শুক্র বার ৯-১০ ঘণ্টা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিতণ্ডা চলে বৃষ্টির পরিবারের। বিকেলে তাঁদের হাতে পুত্রসন্তানই তুলে দেওয়া হয়! প্রসূতির পরিবারের তরফে ললিতা বিশ্বাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আমাদের পুত্রসন্তান দেখিয়ে কাগজে সই করানো হয়েছে। আর আজ (শুক্রবার) বাড়িতে ফোন করে হাসপাতাল থেকে জানানো হয় আমাদের মেয়ে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছে! এটা কী করে সম্ভব? এ নিয়ে প্রসূতি বিভাগের নার্সদের কাছে আমরা প্রশ্ন করায় তাঁরা উল্টে আমাদের বলেন, ‘কন্যাসন্তান হয়েছে। পুত্রসন্তানের দাবি জানাচ্ছেন কেন?’ শুধু তাই নয়, আমাদের নোংরা আক্রমণ করা হয়। কিন্তু আমরাও হাল ছাড়িনি। বিক্ষোভ দেখিয়ে গিয়েছি। তারপর হঠাৎই ওঁরা ডেকে বললেন, ওঁদের ভুল হয়েছিল। পুত্রসন্তানকে মায়ের কাছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটা কী চলছে?’’ বৃষ্টির পরিবার প্রশ্ন তুলেছেন, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সুরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। সদ্যোজাত পুত্রসন্তান কী ভাবে বদলে কন্যাসন্তান হয়ে গেল, আবার বিক্ষোভের পর সেটাই কী ভাবে পুত্রসন্তান হল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি করেছে ওই পরিবার। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের সহকারি সুপার নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এমন ঘটনা কেন এবং কী ভাবে ঘটল।’’
ে