শ্রীকুমার কার্জী নিজস্ব চিত্র।
সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা দলে সুযোগ পেলেন দলগাঁও বস্তির বাসিন্দা শ্রীকুমার কার্জী। জেলা ক্রীড়া সংস্থা বা ডিএসএ-র কর্তারা জানিয়েছেন, আলিপুরদুয়ারের কোনও ফুটবল খেলোয়ারের সন্তোষ ট্রফির জন্য বাংলা দলে সুযোগ পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। শ্রীকুমার তা করে দেখানোয় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত জেলার ক্রীড়া মহল। খুশি নেমে এসেছে ফালাকাটা ব্লকের দলগাঁও বস্তিতে শ্রীকুমারের বাড়িতেও।
২১ বছর বয়সের শ্রীকুমার অনেক দিন ধরেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ভক্ত। শ্রীকুমারের বাবা পেশায় জটেশ্বর হাই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী বিপিন কার্জী বলেন, “রাতের পর রাত জেগে ছেলে টিভিতে রোনাল্ডোর খেলা দেখত। তার পর সকালে উঠে বাড়ির উঠোনে নিজে নিজেই রোনাল্ডোর মতো করে ফুটবল কাটিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। ফুটবল খেলা নিয়ে সব সময়ই ছেলে প্রচুর পরিশ্রম করেছে। সে জন্যই হয়ত এতো বড় সুযোগ পেয়েছে। আমি চাই, ও আরও এগিয়ে যাক।”
ছোটবেলায় বাড়ির কাছেই একটি স্কুলে পড়াশোনা করতেন শ্রীকুমার। তার পর জটেশ্বর হাই স্কুলে ভর্তি হন। শ্রীকুমার বলেন, “ছোটবেলায় পাড়ার দাদাদের ফুটবল খেলতে দেখতাম। তখন থেকেই ফুটবলের প্রতি একটা আগ্রহ জন্মেছিল।” শ্রীকুমারের বাড়ির সূত্রে জানা গিয়েছে, একটু বড় হওয়ার পর তাসাটি চা বাগানের মাঠে পাড়ার দাদাদের সঙ্গে ফুটল খেলতে যেতেন তিনি। বীরপাড়া জুবলি ক্লাবের হয়ে খেলা ছাড়াও আলিপুরদুয়ার জেলা দলের হয়েও তিনি ফুটবল খেলেন। ২০১৮ সালে ইষ্টবেঙ্গল ক্লাবের অনূর্ধ্ব ১৮ ফুটবল অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পান শ্রীকুমার। গত বছর জর্জ টেলিগ্রাফের হয়ে কলকাতা লিগ খেলেন।
মাঠে ফরওয়ার্ড পজ়িশনে খেলেন শ্রীকুমার। জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, সন্তোষ ট্রফির জন্য সোমবার কুড়ি জনের বাংলা দল ঘোষিত হয়। তাতে সুযোগ পেয়েছেন আলিপুরদুয়ারের এই ফুটবল খেলোয়াড়। শ্রীকুমার জানান, আজ, বুধবার সন্তোষ ট্রফি খেলতে বাংলা দলের সঙ্গে কেরলে যাবেন তিনি। সেখানে চারটি খেলা রয়েছে। শ্রীকুমারের কথায়, “প্রথম একাদশে সুযোগ পেলে গোল করে দলকে জিতিয়ে বাংলার নাম উজ্জ্বল করতে চাই।”
আলিপুরদুয়ার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব সঞ্চয় ঘোষ বলেন, “সন্তোষ ট্রফির জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে আগে কোনও ফুটবল খেলোয়ার বাংলা দলে সুযোগ পাননি। শ্রীকুমারই প্রথম তা করে দেখালেন। গোটা আলিপুরদুয়ার তাঁর জন্য গর্বিত। মাঠে নামার সুযোগ পেলে সন্তোষ ট্রফিতে শ্রীকুমার সাফল্যের সঙ্গে ফুটবল খেলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।” পাশাপাশি শ্রীকুমারের বাংলা দলে সুযোগ পাওয়ার ঘটনা জেলার বাকি ফুটবল খেলোয়ারদেরকে উৎসাহিত করবে বলেও জানান জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্তারা।