অবহেলা: বেহাল রাস্তা। মালদহে। নিজস্ব চিত্র
কালিয়াচকের অখ্যাত গ্রাম সৈয়দপুরের নাম মালদহ জেলা তো নয়ই, কালিয়েচকের অধিকাংশ বাসিন্দার কাছেই অজানা ছিল। কিন্তু গত বছরের ৬ ডিসেম্বর রাজস্থানে এই গ্রামের বাসিন্দা আফরাজুল খানের খুনের পরে গ্রামটি রাতারাতি খবরের শিরোনামে চলে এসেছিল।
আফরাজুলের খুনের পরপরই সাংসদ, মন্ত্রী থেকে শুরু করে ভিআইপিদের আনাগোনা রোজ লেগেই ছিল সৈয়দপুরে, তাঁর বাড়িতে। কিন্তু ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সৈয়দপুরে আফরাজুলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার বেহাল রাস্তা দেখে সেই সময় জেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী। জেলাশাসক তখনই রাস্তাটি সংস্কারের নির্দেশ দেন জেলা পরিষদকে। রাস্তাটি পুরো সংস্কার করতে পৃথক একটি ডিপিআরও তৈরি করতে বলা হয়েছিল কালিয়াচক-১ ব্লকের বিডিওকে। কয়েক মাস পর জেলা পরিষদের তরফে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরুও হয়েছিল। অভিযোগ, দক্ষিণ কদমতলা থেকে কামাল মোড় পর্যন্ত অংশ অসম্পূর্ণ সংস্কারের পর আর কাজ বন্ধ। এমনকী, আফরাজুলের বাড়ি পর্যন্তও সেই সংস্কারের কাজে এগোয়নি। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সমস্যা এখনও রয়ে গিয়েছে সৈয়দপুর-সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের।
জালুয়াবাথাল পঞ্চায়েতের সৈয়দপুর গ্রামে পৌঁছনোর এটাই একমাত্র রাস্তা। জালালপুরের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে সৈয়দপুর হয়ে দক্ষিণ কদমতলা পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তাটি ১৬ বছর আগে শেষ বার সংস্কার হয়েছিল। জানা গিয়েছে, সিপিএমের শেফালি খাতুন যখন মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন, সেই সময় নাবার্ডের অর্থে রাস্তাটি পাকা করা হয়েছিল।
আফরাজুল-কাণ্ডের পরে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য আরআইডিএফ প্রকল্পে প্রায় দেড় কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়। জেলা পরিষদই কাজটি শুরুও করেছিল। কিন্তু সেই কাজ এখন মাঝপথে বন্ধ। বেহাল রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আফরাজুলের স্ত্রী গুলবাহার বলেন, ‘‘শুনেছিলাম মন্ত্রী-সাংসদরা রাস্তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করায় জেলা পরিষদ রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু কোনও সংস্কারই হয়নি।’’ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সামসুল হক বলেন, ‘‘সদ্য দায়িত্ব পেয়েছি। কেন কাজ বন্ধ, তা দেখছি।’’